এই কান্নায় কি ভুলের মাশুল দিতে পারবেন গাপটিল?
গত বিশ্বকাপে মার্টিন গাপটিলের দারুণ ছন্দময় ব্যাটিংয়েই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার টিকেট পায় নিউজিল্যান্ড। অথচ এই বিশ্বকাপে তিনিই হয়ে গেলেন ভিলেন। খেলার মঞ্চটাই এমন। আজ নায়ক তো কাল ভিলেন। তেমনি শিরোপা ছোঁয়ার মঞ্চে গাপটিলের করা ভুলগুলো নিউজিল্যান্ডের বিশ্বজয়ের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দেয়। তাতে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয় ব্ল্যাকক্যাপদের।
গত বিশ্বকাপে ডাবল সেঞ্চুরি এবং পাঁচ শতাধিক রান করা গাপটিল এবার কিউই ইতিহাসে খলনায়ক হয়েই থাকলেন। বছরজুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা গাপটিল বিশ্বকাপের পুরো আসরেই ব্যর্থতার বৃত্তে আবদ্ধ ছিলেন। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে নিউজিল্যান্ড জিতেছে ঠিকই, কিন্তু একটি ম্যাচেও জয়ের নায়ক হতে পারেননি গাপটিল। তবুও ফাইনালে তাঁর ওপরই ভরসা রাখেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু ফাইনাল মঞ্চেও ব্যাট হাতে চরম ব্যর্থ গাপটিল। দুই চার ও একটি ছক্কায় ১৮ বলে ১৯ রান করে আউট হয়েছেন ক্রিস ওকসের বলে। পুরো টুর্নামেন্টে ১০ ইনিংস ব্যাট করে তিনি সংগ্রহ করেছেন মোটে ১৮৬ রান, গড়ে ২০.৬৬ করে।
গতকাল শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার মাশুল দেওয়ার সুযোগ ছিল গাপটিলের। তিনি করলেন উল্টোটা। ম্যাচটা যখন নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণে ছিল, তখন এক ভুলে পুরো মোড় ঘুরিয়ে দেন এই ওপেনার। ফিল্ডিংয়ে সময় ৫০তম ওভারে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি থ্রো করলেন গাপটিল। যে থ্রোতে রানআউট তো হলোই না, বরং বাড়তি চারসহ মোট ৬ রান পেয়ে গেল ইংল্যান্ড। ম্যাচটা আসলে ঘুরে যায় তখনই, গড়ায় সুপার ওভারে। এরপরও নায়ক হওয়ার হাতছানি ছিল গাপটিলের সামনে। সুপার ওভারে ব্যাট করে ১৫ রান করে ইংলিশরা। তাতে ১৬ রানের টার্গেট দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ডের সামনে। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক এবারও আস্থা রাখেন গাপটিলের ওপর। ১৫ রান মোকাবিলা করতে মাঠে নামানো হয় নিশাম ও গাপটিলকে। কিন্তু এবারও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেন গাপটিল।
নিশামের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে হারানোর সুযোগ প্রায় চলেই এসেছিল নিউজিল্যান্ডের সামনে। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ইংলিশদের দেওয়া ১৬ রানের লক্ষ্যের খুব কাছে চলে যান নিশাম। কিন্তু শেষ বলে স্ট্রাইকে চলে আসেন গাপটিল। শেষ বলে নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল ২ রান। ব্যাটিংয়ে ছিলেন গাপটিল। সেই ২ রানও করতে পারেননি গাপটিল। ১ রান করে দ্বিতীয় রান করতে গিয়ে রানআউট হয়ে ফিরে যান শূন্য হাতে। টাই হয় সুপার ওভারও। মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
শিরোপার এত কাছে এসে আবারও হাতছাড়া করার আক্ষেপে পুড়ছে পুরো নিউজিল্যান্ড শিবির। কিন্তু গাপটিলের কষ্টটা সবার চেয়ে আলাদা। এত ভুলের অনুশোচনায় মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু এই কান্নায় কি আর ভুলের মাশুল দেওয়া সম্ভব?