১২ জনকে ব্যাট করিয়ে ক্যারিবীয়দের নতুন ইতিহাস!
সম্প্রতি ক্রিকেটে চালু হয়েছে বদলি খেলোয়াড় খেলানোর ‘কনকাশন’ পদ্ধতি। যার মানে হলো, ম্যাচ চলাকালীন কোনো ক্রিকেটার গুরুতর আহত হলে তাঁর বদলি খেলোয়াড় নামানোর অনুমতি পাওয়া যাবে। কিছুদিন আগে অ্যাশেজে প্রথম এই নিয়মের সুবিধা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবার সেই নিয়মের সুবিধা পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজও। কিন্তু এই সুবিধায় এক ইনিংসে ১২ জনকে ব্যাট করিয়ে নতুন ইতিহাসের অংশ হলো ক্যারিবীয়রা।
অ্যাশেজে ইতিহাসের প্রথম বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন মারনাস ল্যাবুশেন। লর্ডস টেস্টে স্টিভ স্মিথের বদলি হিসেবে মাঠের নামার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে প্রথম ইনিংসের পুরোটাই খেলেছেন স্মিথ। দ্বিতীয় ইনিংসে স্মিথের বদলি হিসেবে নামানো হয় ল্যাবুশেনকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এক ইনিংসেই ১২ জনকে ব্যাট করার সুবিধা পায় তারা। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে ড্যারেন ব্রাভো অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়লে তাঁর বদলি হিসেবে ১২তম ব্যাটসম্যান হয়ে ব্যাট করেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। তাতে টেস্ট ক্রিকেটের ১৪২ বছরের ইতিহাসে কোনো দল এই প্রথম এক ইনিংসে ১২ জনকে ব্যাট করানোর সুযোগ পেল। ইতিহাস গড়ার দিনে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন ব্ল্যাকউড।
অবশ্য ১২ জনকে ব্যাট করিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় দেখেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
একদিন হাতে রেখেই স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৫৭ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে ভারত। কিংস্টন টেস্টে ক্যারিবীয়দের হেসেখেলে হারাল অতিথিরা। ২-০ ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে টেস্ট বিশ্বকাপের প্রথম সিরিজজয়ী দলের সম্মান পেল বিরাট কোহলির দল। দুই জয়ে পূর্ণ ১২০ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টেস্টের চতুর্থ দিনে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৮ উইকেট। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৪২৩ রান। দুই উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিনের শুরুতে অসুস্থতার কারণে হারায় ড্যারেন ব্রাভোকে। দলীয় ৯৭ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন রোস্টন চেজ। এক রানে ইশান্ত শর্মার শিকার হন শিমরন হেটমায়ার। স্যামার্থ ব্রুকস ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। ২১০ রানের মাথায় থেমে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। তাতে ২৫৭ রানের বিশাল জয় পায় ভারত।
ভারতের হয়ে বল হাতে সমান তিনটি করে উইকেট নেন জাদেজা ও শামি। ইশান্ত শর্মা দুটি ও বুমরাহ একটি উইকেট নেন।
এর আগে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতের ৪১৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৭ উইকেটে ৮৭ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় দিন বাকি তিন উইকেটে আরো ৩০ রান যোগ করে ক্যারিবীয়রা। তারা ১১৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। ভারতীয় পেসার জসপ্রিত বুমরাহ হ্যাটট্রিকসহ ২৭ রানে শিকার করেন ছয় উইকেট। ফলে ২৯৯ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনে পড়ে হোল্ডারের দল। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলোঅন না করিয়ে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে ভারত।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে ৫৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। লোকেশ রাহুল ৬, মায়াঙ্ক আগারওয়াল ৪, অধিনায়ক বিরাট কোহলি (০) ও চেতেশ্বর পুজারা ২৭ রান করে আউট হন। টপঅর্ডার ব্যর্থ হলেও পঞ্চম উইকেটে দুর্দান্ত লড়াই করেন আজিঙ্কা রাহানে ও প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা হনুমা বিহারি। অবিচ্ছিন্ন ১১১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। দিন শেষে চার উইকেটে ১৬৮ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৪৬৮ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড়ায়। আটটি চার ও একটি ছক্কায় ১০৯ বলে রাহানে অপরাজিত ৬৪ ও বিহারি আটটি চারে ৭৬ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেন।