নির্বাচকরা ঠিক আছেন তো?
হুটহাট দলে পরিবর্তন আনছেন নির্বাচকরা। তাতে সুফলের তুলনায় অস্থিরতাই বেশি। এই তো চলতি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজেই কত চমক এলো বাংলাদেশ স্কোয়াডে!
প্রথম দুই ম্যাচে চমক ছিলেন তাইজুল ইসলাম, আফিফ হোসেন, ইয়াসিন আরাফাত ও মেহেদী হাসান। একাদশে সুযোগ পেয়ে এখনো টিকে আছেন তাইজুল ও আফিফ।
পরের দুটিতে তো আরো পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন ইয়াসিন ও মেহেদী হাসান। নতুন করে এলেন নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও নাজমুল হাসান শান্ত। সেই সঙ্গে পুরোনোদের মধ্য থেকে ডাকা হয়েছে শফিউল ইসলাম ও রুবেল হোসেনকে।
হুটহাট এত পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবির সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। তাঁর প্রশ্ন, এত পরিবর্তনের মাঝে নির্বাচকরা তাদের কাজ ঠিকমতো করছেন কি না? এ ছাড়া বিসিবিতে বর্তমান দুজন নির্বাচক (হাবিবুল বাশার সুমন ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু) হলেও এর মাঝে দল নির্বাচনে অন্যদের নাক গলানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক এই নির্বাচক।
আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের ফারুক বলেন, ‘আমার মনে হয় নির্বাচক আছেন পাঁচ-সাত জন! আমি যখন প্রধান নির্বাচক পদ ছেড়েছি, তখন নির্বাচক ছিল দুজন। সঙ্গে খালেদ মাহমুদ সুজন ম্যানেজার হিসেবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকত। এরপর শর্ত তৈরি করা হয়, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে যে থাকবে সেও একজন নির্বাচক। এখন নির্বাচক আসলেই অনেকজন। বিষয়টি ইতিবাচক হলে আমি থাকতাম। কিন্তু এই নিয়মে কাজ করব না বলেই আমি ছেড়ে দিয়েছি।’
এরপর নির্বাচকদের হুটহাট পরিবর্তন নিয়ে সাবেক এই নির্বাচক যোগ করেন, ‘একটা দলের পারফরম্যান্স ভালো বা খারাপ হবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ কি ঠিকঠাক করতে পারছি কি না? যেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সেটাতে ঠিকমতো হচ্ছে কি না। আমার কাছে মনে হয় নির্বাচনের দায়িত্ব এমন কাউকে দিতে হবে যে তাঁর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে। একজন ক্রিকেটার যখন সুযোগ পেল, কেন সুযোগ পেল? বা কেউ বাদ পড়লে কেন বাদ পড়ল, এসব ব্যাখ্যা বর্তমান সময়ে আমরা খুব একটা দেখতে পাই না। আর দল হারলে যে অস্থিরতা তৈরি হয় সেটাও কাম্য না। যেহেতু আমরা সিলেকশনের কাজ ভালোমতো করছি না, তাই অস্থিরতা খুব সহজেই হয়ে যায়। একটা-দুইটা ম্যাচ খারাপ করলে মনে হয় ঠিক হচ্ছে না, আবার অনেক ধরনের পরিবর্তন। বোর্ড যেন এ ব্যাপারে একটু দক্ষতার পরিচয় দেয়।’
সাবেক এই নির্বাচক মনে করেন নতুনদের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত। যাতে একটি নির্দিষ্ট পজিশনে নতুনরা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে। তিনি বলেন, ‘কিছু ক্রিকেটার আছে এসে মাত্র মানিয়ে নিতে পারে। যেমন মুস্তাফিজ এসেই পারফর্ম করে এক জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে। আবার অন্য কাউকে সময় দিতে হতে পারে। যদি মনে করা হয় তাকে ওই পজিশনে দরকার তাহলে পাঁচ-সাত ম্যাচ তাকে ওই পজিশনে সুযোগ দিতে হবে। ব্যাক করার জন্য অন্তত নির্বাচক থাকবে। যে বলবে, ওকে এই কারণে নিয়েছি বা নেইনি। ইদানিং দেখা যায় একটা ক্রিকেটারকে এক ম্যাচ খেলিয়ে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এতে পুরো দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়।’