রাজধানীতে ল্যাপটপ মেলা শুরু, ক্রেতা-বিক্রেতা প্রায় সমান সমান!
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘ইসেট ল্যাপটপ ফেয়ার-২০১৯’। তবে আজ বিকেলে মেলার ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় সমান সমান! ক্রেতা কম থাকায় বিক্রেতারা গলা ফাটিয়ে ডাকছেন মেলায় আসা মানুষদের। বলছেন, নানা সুবিধার কথা। কোনো কোনো স্টলের দোকানিদের ক্রেতা না থাকায় একাকি সময় পার করতেও দেখা গেছে।
সুরভী ইন্টারপ্রাইজ লিমিটেড কোম্পানির লাইফ নামের একটি কম্পিউটার স্টলে ‘লাইফ’ ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বিক্রি করা হচ্ছিল। ওই স্টলের দোকানি মিতু আক্তার ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জোরে জোরে ডাকতে ডাকতে বলে ওঠেন, ‘নিয়ে যান, নিয়ে যান, সাড়ে ১৩ হাজার টাকায় ল্যাপটপ। একটি ল্যাপটপ কিনলে আরো দশটি পণ্য ফ্রি।’
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। মেলায় অন্তত ১০টি বিভিন্ন কোম্পানির স্টলের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলা শুরুর প্রথম দিন এবং বৃষ্টিযুক্ত আবহাওয়া থাকায় বিকিকিনি নেই বললেই চলে। তবে আগামীকাল শুক্র ও পরশু শনিবার মেলা জমে উঠবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
মেলায় ক্রেতা কম থাকায় আরো কয়েকটি স্টলের দোকানিকে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ডাকতে দেখা গেছে। যেমন- কম্পিউটার ভিলেজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে আসুস ব্র্যান্ডের বিক্রি করা হচ্ছিল। সেখানে থাকা এক দোকানি জোরে জোরে ক্রেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আসুস কিনুন, তিন থেকে চার হাজার টাকা মূল্য ছাড় পাবেন।’
পরে ওই স্টলের মো. আহসান নামের এক দোকানির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেলার প্রথম দিন আজ। বেচাকেনা একেবারেই নেই। এই পর্যন্ত পাঁচটি ল্যাপটপ বিক্রি করেছি।’
মেলার প্রধান পৃষ্টপোষক হিসেবে রয়েছে ‘ইসেট’। স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কোম্পানির একটা এন্টিভাইরাসের নাম ইসেট। স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রডাক্ট ম্যানেজার মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব মিলিয়ে আজ বেচাকেনা ভালো না। তবে কাল থেকে ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছি। আজও সন্ধ্যার পরে ভালো বিক্রি হতে পারে।’
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মেলার উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বিকেল ৫টার দিকে মেলা পরিদর্শন করেন। তখন তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটি দেশের ২১তম ল্যাপটপ প্রদশণী। অন্য সব বারের চেয়ে এবার বেচাকেনা ছাড়িয়ে যাবে। তবে আজ প্রথম দিন হওয়ায় ক্রেতা কম মনে হচ্ছে।’
মেলা আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এই মেলায় একটি টাইটেল স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, চারটি স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ২৬টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১০টি স্টলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি নির্মাতা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। সঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান মূল্য ছাড় ও উপহার দিচ্ছে। মেলার সহপৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে আসুস, ডেল, এইচপি ও লেনোভো। মেলার প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে ৩০ টাকা করে। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই মেলা চলছে।