নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইন মার্কেট প্লেস ‘উই হাটবাজার’ উদ্বোধন
দেশীয় পণ্যের পসরা নিয়ে ১০০ জন উদ্যোক্তা মার্সেন্ট নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইন মার্কেট প্লেস- উইহাটবাজার ডট কম। এফ কমার্স, পিকমার্স এবং ঘরোয়া পণ্যকে ই-কমার্স প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে এই প্লাটফর্ম স্মার্ট নারীর ক্ষমতায়নে মাইলফলক হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এই বিশেষায়িত ই-কমার্স প্লাটফর্মের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় তিনি বলেন,তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার একজন মানুষকে কিভাবে পাল্টা দিতে পারে -উই একটি তার উদাহরণ। নারীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে উই।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে জানিয়ে ডাক্তার দীপু মনি বলেন- সরকারের নানান মন্ত্রণালয়ের এই প্রশিক্ষণগুলো দিয়ে নারীরা ক্রমাগত দক্ষ হয়ে উঠছে। তারা সঙ্ঘবদ্ধ হতেও শিখেছে। প্রান্তিক মানুষগুলোকে নারীসহ এই মানুষগুলোকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার চেষ্টা আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা যে সাম্যের পৃথিবীটা করতে চাই, যেখানে নারী নির্যাত দিতে হবে না, নারী তার অধিকার ভোগ করবে, যেখানে কোন সহিংসতা থাকবে না; সেই জগৎটা তৈরি করতে হলে একদিকে যেমন নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের চেষ্টা করছি একই সাথে তার অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নটা খুব জরুরী। তুই সেই কাজটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করছে বলে আমি মনে করি।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যেগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এবং বিশ্বব্যাংকের লিড কানট্রি ইকোনোমিস্ট সোলায়মান কুলিবালি।
সভাপতির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকারের নানা সুবিধার কারণে আজকে ৫০ শতাংশের বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। এখন থেকে আরো পাঁচ হাজার নারী উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার টাকা করে গ্রান্ট দেওয়া হবে। আশা করছি জুন মাস থেকেই দেওয়া শুরু হবে।
উই এর সাথে মিলে ডাক বিভাগের মধ্যে একটি সমঝোতায় উদ্যোক্তাদের পণ্য ডেলিভারিতে সহায়তা করা হবে তাদের জন্য বিশেষ ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন- নারী উদ্যোক্তারা খুব সুলভ মূল্যে যাতে উচ্চগতির ইন্টারনেট পান সেই ব্যবস্থা করা হবে।
এ ছাড়াও নগদের ডিজিটাল ব্যাংক চালু হলে বিনা জামাতে নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য যতদূর সম্ভব, সেই লিমিটের একটি ফাইন্যান্সিংয়ালের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে উদ্যোক্তাদের টাকার কোন সমস্যা না থাকে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উই হাটবাজার ডটকম চেয়ারম্যান জাহানুর কবির সাকিব। এরপর নতুন এই প্লাটফর্ম বিষয়ে আলোকপাত করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ঈমানা হক জ্যোতি। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের লিড কানট্রি ইকোনোমিস্ট সোলায়মান কুলিবালি।
অনুষ্ঠানে উই হাটবাজারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক ও উই হাটবাজার এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিমা আক্তার নিশা। তিনি জানান, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে ডিজিটাল কমার্স খাতে দেশে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আশা করা যায়, এই প্লাটফর্মের কল্যাণে ই-কমার্স খাতে এক লাখ নারীর কর্মসংস্থান হবে। এখন ১০০ মার্সেন্ট নিয়ে শুরু করলে সামনে আরও মার্সেন্ট যোগ করা হবে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে এক হাজার মার্চেন্ট যুক্ত করা হবে । পরে আগামী ৫ বছরে এই সংখ্যা ১০ হাজারে নিয়ে যাব ইনশাল্লাহ। আপনারা শুধু ধৈয্য ধারণ করে কাজ করে যান। নিজের উদ্যোগের যত্ন দিন।
অনুষ্ঠানে আইসিটি খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি, বাক্কোসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, অনলাইন মার্কেট প্লেস উই হাটবাজারে প্রথম ১০০ জন মার্চেন্টকে নিয়ে যাত্রা করছে । এখানে শুধুমাত্র নারী উদ্যোক্তাদের বানানো দেশীয় পণ্য পাওয়া যাবে। বিদেশি কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না।