ভারত থেকে ‘অর্থ নেয়’ পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল
পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টকে (এমকিউএম) অর্থ সহায়তা দিয়েছে ভারত সরকার। এমকিউএম দলের এক নেতা যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের কাছে এ দাবি করেছেন।
এমকিউএম দলের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্ত করতে গিয়ে এ তথ্য পান যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা। এক পাকিস্তানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত ১০ বছরে এমকিউএমের শতাধিক সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে ভারত।
তবে ভারত সরকার এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। সে সঙ্গে এমকিউএমও আনুষ্ঠানিকভাবে এ দাবিকে জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে।
মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের মুখপাত্র সাঈফ মুহাম্মাদ আলী বিবিসি উর্দু সার্ভিসকে জানিয়েছেন, তাঁর দল কখনোই ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো অর্থ বা প্রশিক্ষণ নেয়নি। পাকিস্তান সরকার তাঁর দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের ২৪ সদস্য রয়েছেন। এবং বেশ একটা দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির সবচেয়ে বড় শহর করাচির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আছে দলটি।
এদিকে, এমকিউএম পার্টির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, দলটি ভারতের কাছ থেকে অর্থ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে আসছে।
এর মধ্যে এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, ভারতের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ১০ বছর ধরে শতাধিক এমকিউএম জঙ্গিকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দিয়ে সহায়তা করে আসছে ভারত। ২০০৫-০৬ সালের আগে অল্পসংখ্যক মধ্যম মানের এমকিউএম সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুরসংখ্যক দলের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।
কিছুদিন আগে পাকিস্তানে ধরা পড়া দুই এমকিউএম জঙ্গি জানায় যে, তারা ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে। এরা থাইল্যান্ড হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে বলে পাকিস্তান পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
২০১০ সালে এমকিউএমের জ্যেষ্ঠ নেতা ইমরান ফারুক লন্ডনে তাঁর বাড়ির সামনে খুন হওয়ার পর দলটি নিয়ে তদন্তে নামে যুক্তরাজ্য সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দলটির লন্ডন কার্যালয় ও নেতা আলতাফ হোসেনের বাড়ি থেকে ৭৮ লাখ সাত হাজার ৩৫০ মার্কিন ডলার জব্দ করে যুক্তরাজ্য পুলিশ।
তদন্তের একপর্যায়ে এমকিউএমের সম্পত্তি হিসেবে অস্ত্র, মর্টার, গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জামের তালিকা খুঁজে পায় যুক্তরাজ্যের তদন্ত সংস্থা। ওই তালিকায় এসবের দামও উল্লেখ করা ছিল। তবে এ তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তার কোনো উত্তর দেয়নি দলটি।
কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানে চাপের মধ্যে আছে এমকিউএম। মার্চ মাসে দেশটির নিরাপত্তারক্ষীরা করাচিতে দলটির সদর দপ্তরে অভিযান চালায়। সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করে পাকিস্তান পুলিশ। তবে এমকিউএম জানায়, এ সবই পূর্বপরিকল্পিত।