জলঢাকা থেকে নেলসন, জমজমাট বাঙালি বিয়ে
বাংলাদেশের নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মেয়ে নাহিন আক্তার। পেশায় চিত্রশিল্পী। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ভারতের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তাঁর সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের প্রভাষক ড. বেঞ্জামিন স্কট কিংসব্রির পরিচয়। এরপর তা রূপ নেয় প্রণয়ে।
গত ৩ জুন নিউজিল্যান্ডের নেলসন প্রদেশের ওয়াইমিয়া ওয়েস্টের সেন্ট পিটার অ্যান্ড পল চার্চে বাঙালি ঢঙে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়েতে ছিল রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও বাংলা লোকগান।
কনে নাহিন আক্তারকে পরানো হয়েছিল লাল বেনারসি শাড়ি। দুই হাত রাঙানো হয়েছিল মেহেদি দিয়ে। হাতে ছিল লাল চুড়ি ও সোনার বালা। কানে সোনার দুল, গলায় সোনার হার।
বাঙালি বিয়ের সাজ থেকে বাদ যায়নি নাহিনের ননদ রেবেকা কিংসব্রিও। তিনি পরেছিলেন একটি নীল রঙের শাড়ি, হাতে নীল রঙের চুড়ি। তাঁর হাতও মেহেদি দিয়ে রাঙানো ছিল।
বিয়েতে পরিবেশিত হয়েছিল বাঙালি খাবার। কনের জন্য ব্যবহৃত হয় কেডেলিক ১৯২৯ সালের পারিবারিক ট্রেডিশনাল কার।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এই প্রথম নিউজিল্যান্ডবাসী এমন অসাধারণ বাঙালি ঢঙে বিয়ে দেখেছে বলে জানালেন নাহিন আক্তার। ই-মেইল ও ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে এনটিভি অনলাইনের কথা হয়।
নাহিন আক্তার জানান, তিনি এখনো বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর বর ড. বেঞ্জামিন স্কট কিংসব্রি ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বেঞ্জামিনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বেঞ্জামিন তখন তাঁর ‘ইম্পেরিয়াল ডিজাস্টার’ নামক বইয়ের কাজে কলকাতায় যান। সেখানে পরিচয় থেকে পরে প্রণয় হয়। এরপর ওই বছরের নভেম্বর মাসে শান্তিনিকেতনে বেঞ্জামিনের সঙ্গে নাহিনের বাগদান হয়।
নাহিন আক্তার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অন্য সংস্কৃতি, ভাষার সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বেঞ্জামিনের পরিবারের আন্তরিকতা ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। বেনের ভালোবাসা ও তাঁর পরিবারের ভালোবাসা সাহায্য করে আমায় এই পরিবারের একজন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে। ওর পরিবার আমার সংস্কৃতিকে গ্রহণ করেছে এক অসাধারণ ভঙিমায়। তারা আমার বাংলা সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানকে বাঙালি ঢঙে সাজায়।’