জাপানি তরুণরা শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহ হারাচ্ছেন কেন?
জাপানের তরুণরা শারীরিক সম্পর্কের প্রতি ক্রমাগত আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
ওই গবেষণা অনুযায়ী, জাপানের অনেক তরুণ জীবনে কখনো শরীরিক সম্পর্কে জড়াননি। আর অনেকে আগে জড়ালেও এখন আর শারীরিক সম্পর্কের ধারেকাছেও যাচ্ছেন না।
ওই গবেষণা থেকে জানা যায়, জাপানের ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ জীবনে কখনো শরীরিক সম্পর্কে জড়াননি। এঁদের মধ্যে ৬৪ শতাংশের প্রেমের বা কামের সম্পর্ক নেই।
জাপানের তরুণদের কেন এমনটা হচ্ছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন বিবিসির টোকিও প্রতিনিধি রুপার্ট উয়ংফিল্ড হেইস। তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন কয়েকজন জাপানির সঙ্গে।
জাপানের নাগরিক উদীয়মান কমেডিয়ান অ্যানো মাতসুই (২৭) বিবিসিকে বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাসের বড় অভাব। আমি নারীদের কাছে এতটা জনপ্রিয় নই।’
‘আমি এক মেয়েকে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম, সে আমাকে না বলে দিয়েছে। এটা আমাকে মানসিকভাবে আহত করে।’
বিবিসির প্রতিবেদক মাতসুইয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার বন্ধু বা পরিচিতদের ক্ষেত্রেও কি এমনটা হয়?’
জবাবে মাতসুই বলেন, ‘এখানে আমার মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা নারীসঙ্গ ভয় পান। আমরা সব সময় প্রত্যাখ্যানের ভয়ে থাকি। তাই আমরা শখের কাজ করে সময় পার করে দিই। আমি নিজেকে ঘৃণা করি। কিন্তু এ বিষয়ে আমার তেমন কিছুই করারও নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৪৫ বছর বয়সী নারী জাপানি চিত্রশিল্পী রুকুদেনাশিকো বিবিসিকে বলেন, ‘…কারণ আমার কাছে ছেলেবন্ধুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্ক গড়ে তোলা খুব একটা সহজ নয়। একজন প্রেমিক প্রথমেই ডেটে যাওয়ার কথা বলে সম্পর্ক শুরু করতে চান! তবে আমি মনে করি, পুরুষরা নারীবিমুখ হলেও যৌনতাবিমুখ নয়। তারা ইন্টারনেটে পর্নো দেখে, সেখান থেকেই যৌন তৃপ্তি নেয়।’
অ্যাকাউন্ট এগজিকিউটিভি আন্না (২৪) বলেন, ‘আমার কাছে শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে খাওয়া ও ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। আমার শরীরিক সম্পর্কের কোনো প্রয়োজন নেই, আমি এতে মোটেও আগ্রহী নই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার পর আমি মা-বাবার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি পাই।’
‘আমি এখন ইচ্ছামতো বাইরে থাকতে পারি, বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করতে পারি, আমি স্বাধীন। ছেলেবন্ধু এই স্বাধীনতার অন্তরায়। তাই আমি কোনো সম্পর্কে জড়াতে চাই না।’
বিবিসির প্রতিবেদক হেইস বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পর্নোগ্রাফি ও কর্মব্যস্ততা জাপানের তরুণ-তরুণীদের শারীরিক সম্পর্ক বিমুখ করে তুলছে।