ইউটিউবের ভিডিও শিশুদের ওপর কী প্রভাব ফেলে?
ইউটিউব তারকারা শিশুদের অধিক ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে উৎসাহিত করতে পারেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তারকারা বাচ্চাদের অস্বাস্থ্যকর খাবার বা জাংক ফুড খাওয়াতে উৎসাহিত করে থাকেন।
ইউটিউবে জনপ্রিয় ভ্লগারদের (ভিডিও ব্লগার) বিজ্ঞাপন যেসব শিশু দেখে তারা ২৬ শতাংশ বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খায়, যারা দেখে না তাদের তুলনায়।
নিরাপদ খাবার বিষয়ক সংগঠন ইউরোপিয়ান কংগ্রেস অন ওবিসিটি গবেষণাটি প্রকাশ করেছে। এতে ভিডিও দেখে শিশুদের প্রতিক্রিয়া নিরীক্ষা করা হয়। গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, জাংক ফুডের বিজ্ঞাপনের ওপর কঠোর আইন প্রণয়ন করা উচিত।
গবেষণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া তারকা জোয়েলা এবং আলফি ডেয়েসকে নির্বাচন করা হয়। দুজনের ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার যথাক্রমে এক কোটি ৯ লাখ ও ৪৬ লাখ।
১৭৬ শিশুর ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় এবং তাদের তিনটি অংশে ভাগ করা হয়। এই শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাবার, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নন ফুড প্রোডাক্টসের (খাওয়া যায় না এমন পণ্য) ছবি দেখানো হয়।
শিশুরা তখন স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাস্থ্যকর খাবরের মধ্য থেকে বেছে নিতে বলা হয়। এর মধ্যে আঙুর, গাজর, চকলেট অথবা জেলি মিষ্টি ছিল। যারা অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করে তারা গড়ে ৪৪৮ ক্যালরি গ্রহণ করে। অন্য শিশুরা ৩৫৭ ক্যালোরি গ্রহণ করে।
গবেষকদের মধ্যে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. এমা বয়ল্যান্ড বলেন, শিশুরা ভ্লগারদের তাদের প্রতিদিনের সঙ্গীর মতোই ভাবে। ভ্লগাররা শিশু-কিশোরদের প্রজন্মের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাদের (ভ্লগার) কিছু দায়িত্বও রয়েছে বলে এই গবেষক মনে করেন।
গবেষকদের মতে, শিশুদের অনলাইন ব্যবহারের প্রতি আরো রক্ষণশীল হওয়া উচিত বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে। কারণ শিশুরা বিজ্ঞাপন এবং প্রকৃত বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারে না।
প্রধান গবেষক আন্না কোটস বলেন, ‘আমরা জানি যে, যদি আমরা শিশুদের ঐতিহ্যবাহী পানীয়গুলো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেখাতে পারি তাহলে ও পানীয় পানের প্রতি তাঁদের আগ্রহ বাড়বে। এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারকাদের প্রতি শিশুদের প্রতিক্রিয়া কেমন, সেটি আমরা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম। আমরা দেখেছি শিশুরা তাদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। তারকারা যে সেসব পণ্য প্রচারের জন্য পারিশ্রমিক পান, শিশুদের এই বিষয়টি বোঝানোই হবে আমাদের পরবর্তী গবেষণা।’