গুয়েতেমালায় অগ্ন্যুৎপাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালায় আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত নিহতদের সবার পরিচয় জানা যায়নি। স্বজনরা তাঁদের মরদেহ শনাক্ত করতে অস্থায়ী মর্গে ছোটাছুটি করছেন।
গতকাল সোমবার দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা (কনরেড) এসব তথ্য দেয়।
কনরেডের দেওয়া তথ্য মতে এল রোডেও গ্রামের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নুৎপাতে এই গ্রামটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিস্ফোরণ থেকে ৩০ কিলোমিটার (১৮.৬ মাইল) দূরে এসকুইন্টলা শহরের মর্গেও স্বজনরা তাঁদের আত্মীয়র মৃতদেহ খুঁজে ফিরছেন।
ফুয়েগোর গত রোববারের এই অগ্ন্যুৎপাত চার দশকের মধ্যে সবচাইতে ভয়াবহ। গুয়েতেমালার এই বিস্ফোরণটি দেশটির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একেবারে কাছে হয়েছে এবং আগ্নেয়গিরি ছাইয়ে হাজার হাজার একর কফির খামার ছেয়ে গেছে।
ভূতাত্ত্বিক, অগ্ন্যুৎপাত এবং আবহাওয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক এডি স্যানচেজ সাংবাদিকদের বলেছেন, সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ লাভার উদগীরণ অনেকটাই কমে এসেছে এবং আগামীতেও এটি কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে সামনের দিনগুলোতে উদ্ধার অভিযানে বাধা সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
কনরেডের একজন মুখপাত্র বলেন, সোমবারের মৃত দেহ সৎকারের কাজটি অন্য একটি অগ্ন্যুৎপাতের কারণে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল এবং ফুয়েগোর দক্ষিণে ভূমিধসের সম্ভাবনা ছিল। ওই দিন বিকেলে প্রবল বৃষ্টি কারণে উদ্ধার অভিযান পরের দিন সকাল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখা যায় সর্বস্ব হারিয়ে গ্রামের লোকজন রাস্তায় নেমে এসেছে। ঘরবাড়ি এবং গাছপালা সম্পূর্ণ বাদামি ও ধূসর বর্ণ ধারণ করেছে।
নিখোঁজদের নামের তালিকা একটি এজেন্সি অনলাইনে রেজিস্ট্রি করছে। দেশটির জাতীয় কফি সংস্থার হিসাব মতে, উদগীরণের কাছাকাছি প্রায় ছয় হাজার ৮৯০ একর কফির ক্ষেত বালি এবং ছাইয়ে ছেয়ে গেছে। এতে গুয়েতেমালার কফি উৎপাদনের প্রায় ০.৯১ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। সংস্থাটি আরো বলছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ছবিতে দেখা যায় সেনাবাহিনীর মানুষ মুখে নীল মুখোশ পরে বেশি আক্রান্ত এলাকাগুলো ঘেরাও করে রেখেছে। গতকাল শেষ বিকেলে আগ্নেয়গিরি থেকে গ্যাস এবং পাথর নিগর্ত হতে থাকে।
অ্যান্টিগুয়ার ঔপনিবেশিক শহর ফুয়েগো সেন্ট্রাল আমেরিকার ৩৪টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি। ইউনেস্কোর ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত এই শহরটিতে প্রায়ই অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এই উদগীরণটি প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের দিকেই বেশি হয়।