ইইউর নিষেধাজ্ঞার পর মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তা বরখাস্ত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ওপর চালানো হত্যা ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞার তালিকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ে ওই কর্মকর্তার নাম উঠে আসে।
চ্যানেল নিউজ এশিয়ার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যের প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গাকে জোর করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা এবং জাতিগত নিধনের অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।
দেশটির সেনাবাহিনী এই হত্যাযজ্ঞ চালালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মিয়ানমারের নেতারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে সমালোচিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির শীর্ষ ওই সেনা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হলো।
চাকরিচ্যুত ওই সেনা কর্মকর্তার নাম মেজর জেনারেল মং মং সোয়ে। তিনি রাখাইন রাজ্যের সেনাবাহিনীর প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।
গতকাল সোমবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, যথাযথ দায়িত্বপালন না করায় মেজর জেনারেল মং মং সোয়েকে ‘নিষ্ক্রিয়’ করা হয়েছে।
এমন সময় মিয়ানমার এই ঘোষণা দিল যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই সাতজনের মধ্যে মং মং সোয়েও রয়েছেন। তবে মিয়ানমার অবশ্য ইইউর দেওয়া তালিকার সঙ্গে এই চাকরিচ্যুতির সম্পর্ক অস্বীকার করেছে।
ওই ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, গত নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে পুনর্বহাল করা হয় মং মং শোয়েকে। সেই রাজ্যে কাজ করার সময় তাঁর দায়িত্বে অবহেলা ও কাজে দুর্বলতা পেয়েই তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হলো।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, কমান্ডার অব দ্য ব্যুরো অব স্পেশাল অপারেশনস অং ক্যেও জ্য যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় মে মাসে তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। এই কর্মকর্তার নামও ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই তালিকায়।
এর আগে গতকাল কানাডা জানিয়েছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তারাও এর সঙ্গে একমত।
গত বছর থেকে রাখাইন রাজ্যে শুরু হওয়া এই হামলা ও হত্যার কারণে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা নাগরিক পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এদের মধ্যে অনেকেই যথাযথ নিরাপত্তা পেলে নিজ দেশে ফিরে যেতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে চ্যানেল নিউজ এশিয়া।