নওয়াজ শরিফ ও তাঁর মেয়েকে কোথায় রাখা হয়েছে
লাহোর বিমানবন্দরে পৌঁছামাত্র পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় জবাবদিহি আদালত (এনএবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তারের পর বিশেষ বিমান করে তাদের ইসলামাবাদে নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রথমে রাওয়ালপিন্ডি শহরের আদিয়ালা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয় দুজনকে। ইসলামাবাদের ম্যাজিস্ট্রেট ও জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নওয়াজ ও মরিয়মের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া চালানো হয়।
এর মধ্যে এনএবির আইনজীবী দল জবাবদিহি আদালতের কাছে বাবা-মেয়েকে আদালতে হাজির না করার আবেদন করেন। এর কারণ হিসেবে আইনজীবীরা বলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার কারণে দুজনকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হবে না।
আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিম আহমেদকে নিয়োগ দেন আদিয়ালায় কারাবাসের পরোয়ানার বিষয়টি কার্যকর করার জন্য।
শেষ পর্যন্ত দুজনকে কোথায় রাখা হয়েছে তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
ইসলামাবাদ পুলিশের প্রধান কমিশনার প্রথমে একটি প্রজ্ঞাপনে জানান যে, রাজধানীর সিহালা পুলিশ ট্রেনিং কলেজকে সাব-জেল ঘোষণা করা হয়েছে। নওয়াজ শরিফ ও তাঁর মেয়েকে সেখানে রাখা হবে। পরে অবশ্য আরেক প্রজ্ঞাপনে সিহালা সাব-জেলে কেবল মরিয়মকেই বন্দি রাখা হবে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে আগের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়।
অনেকেই বলছেন, নওয়াজ ও মরিয়ম দুজনকেই আদিয়ালা কারাগারে রাখা হবে। অন্যরা বলছেন, মরিয়মকে আলাদা করে সিহালা রেস্ট হাউসে রাখা হবে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানায়, লাহোরের আল্লাম ইকবাল বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণের পর নিরাপত্তা কর্মীরা অন্য যাত্রীদের নেমে যেতে বলে। দুজনের পাসপোর্ট জব্দ করেন ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) তিন সদস্য। প্লেনের মধ্যেই তাঁদের ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। এরপর রাত ৯টা ২৫ মিনিটে দুজনকে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে নিয়ে বিশেষ বিমানে ইসলামাবাদের উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়।
নওয়াজ ও মরিয়ম জবাবদিহি আদালতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নওয়াজকে ১০ বছর এবং মরিয়মকে সাত বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক নওয়াজ এবং মরিয়ম তাঁর বাবাকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে অভিযুক্ত। লন্ডনে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে নওয়াজের পরিবারের যার কোনো বৈধ আয়ের উৎস দেখাতে পারেননি সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
রায় ঘোষণার সময় লন্ডনে ছিলেন নওয়াজ ও মরিয়ম। দেশে ফিরে তাঁরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছিলেন।