সেপ্টেম্বরে খুলবে শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘর
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘর। এই জাদুঘরের প্রতি দর্শকদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মুজিবর আল মামুন, কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সচিব মহম্মদ সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব আব্দুল মান্নান ইলিয়াস। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন বাংলাদেশ ভবনের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্য আধিকারিকরা।
শান্তিনিকেতনে ওই বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ও বিশ্বভারতীর সহযোগিতায় শান্তিনিকেতনের নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবনে তিনদিনের বাংলাদেশ উৎসবের আয়োজন করা হবে। উৎসবে বাংলাদেশকে এককভাবে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেই সময়েই বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। নিরাপত্তাসহ অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া যাচ্ছিল না শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরটি। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ উৎসবের আগেই জাদুঘরটির সব কাজ সম্পূর্ণ করে এটিকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
চলতি বছরের ২৫ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের দ্বার উন্মোচন করেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশ ভবনের গ্রন্থাগারটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হলেও জাদুঘরটি খোলা হয়নি। এই জাদুঘরে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ সব ছবি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন নথি, তথ্য প্রভৃতি। তাই এই জাদুঘরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত না করে এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলতে নারাজ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। এ ছাড়া ঠিক করা হয়েছে, বাংলাদেশ ভবনে একটি আর্ট গ্যালারি করা হবে। যেখানে বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবি প্রদর্শিত হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বিশ্বভারতীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরটি ঘুরে দেখেন। পুরো জাদুঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শের পাশাপাশি মূল্যবান তথ্য, নথি এবং চিত্রগুলোকে কভার করার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে কথা হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় গ্রন্থাগারের মহাপরিচালক আশিস কুমার সরকার জানান, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাকি থাকা কাজগুলো শেষ করে জাদুঘরটি সবার জন্য খুলে দিতে চাই। এই ভবনের সঙ্গে বাংলাদেশের সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে রয়েছে। যত বেশি সংখ্যক মানুষ এই ভবন দেখবেন, এই জাদুঘর দেখবেন ততই ভালো। বাংলাদেশ উৎসবের সময়ই আমরা জাদুঘরটি খুলে দিতে পারব বলে আশাবাদী।
আগামী ২২ শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তিরোধান দিবসে বাংলাদেশ ভবনের জাদুঘরসহ পুরোটাই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিকাঠামোগত কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।