আবার শেখ হাসিনাকে চান রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাপ্রধানরা : সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছেন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করবেন বলে আশা করছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা। স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরের দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে তাঁরা পৃথকভাবে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে এ কথা জানান।
শহীদুল হক বলেন, ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা ইস্যু ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ভূমিকার কথা বিবেচনা করে, তাঁরা সবাই আশা প্রকাশ করেছেন যে তাঁর (শেখ হাসিনা সরকার) ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে এবং তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বে থাকবেন। অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের অগ্রগতিও বজায় থাকবে।’
‘গ্লোবাল রিডিং হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবেন। এটি আমরা আলোচনার মধ্যে স্পষ্টভাবে দেখেছি,’ বলেন পররাষ্ট্র সচিব।
বুধবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্স্টি কালজুলাইদ, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েত্তা ফোর, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্জেনার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফেডেরিকা মোঘেরিনি পৃথক বৈঠক করেছেন।
শহীদুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা আশা করছেন, বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তাঁরা। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করার সময়, এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার উদার নীতি ও মানবিকতা প্রদর্শনের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন তাঁরা।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে যেখানে বিশ্বের অনেক দেশ বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, সেখানে শেখ হাসিনা এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করায় তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা।
প্রধানমন্ত্রী জোরারোপ করে বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে নিজ ফিরে যেতে পারে, সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত।
রোহিঙ্গা সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার কক্সবাজার থেকে ভাসানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরা সবাই একমত প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান বাংলাদেশ নয়, মিয়ানমার করতে পারে। তারা বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশকে সহায়তা করবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্জেনার বলেন, উত্তর রাখাইন রাজ্যে একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তিনি মিয়ানমার সরকারকে বোঝাবেন, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যেতে পারেন।