ভারতে ‘তিতলি’র আঘাতে দুজনের মৃত্যু, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশের বেশিরভাগ এলাকা। এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার বেগে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝর তিতলি।
তিতলির আঘাতে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে মৃত্যু হয় দুজনের। ওই এলাকায় আহত হয়েছে বহুমানুষ।
ঘূর্ণিঝড়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যার বহু জায়গায় মাটির বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। গোপালপুর-বহরমপুর সড়কের ওপর গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে খুরদা রোড ও বিজয়নগরের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ আছে ট্রেন চলাচল। খড়গপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়েছে ফলকনামা এক্সপ্রেস। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাতিল করা হয়েছে ভুবনেশ্বর-বেঙ্গালুরু প্রশান্তি এক্সপ্রেস, বিশাখাপত্তনাম-রাইপুর প্যাসেঞ্জার, যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস, গুয়াহাটি এক্সপ্রেস, মুজাফফরপুর এক্সপ্রেসসহ একাধিক ট্রেন। যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে আগরতলা-বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট এক্সপ্রেসসহ একাধিক ট্রেনের। তিতলির প্রভাবে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশগামী পাঁচটি বিমান বাতিল করেছে ‘ইন্ডিগো’। কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর ও বিশাখাপত্তনামগামী একাধিক বিমান বাতিল করা হয়েছে। তিতলির ভয়ঙ্কর আঘাতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উড়িষ্যার সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বাজারঘাট।
অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। উড়িষ্যার গোপালপুর সমুদ্রে নিখোঁজ আছে পাঁচজন জেলে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিতলির আঘাতে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে তিন লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়ে পড়েছে। এসব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। উড়িষ্যার রঞ্জাম, গজপতি জগতসিংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় হচ্ছে প্রবল বৃষ্টি।
ভুবনেশ্বর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূল পেরিয়েছে তিতলি। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম ও দক্ষিণ-পূর্ব গোপালপুর পার করে ধীরে ধীরে তীব্রতা কমাচ্ছে তিতলি। উড়িষ্যা থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় তিতলি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে। যার ফলে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় তিতলির সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় তিতলির নামকরণ করেছে পাকিস্তান। ‘নর্থ ইন্ডিয়ান ওসিয়ান রিজিয়নে’র আটটি দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড এই নামকরণের দায়িত্বে রয়েছে। এই আটটি দেশ মোট ৬৪টি ঝড়ের নামকরণ করে।