লাশ চেয়ে সাংবাদিক খাসোগির দুই ছেলের মিনতি
বাবার লাশের সন্ধান চেয়ে মিনতি জানিয়েছেন নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির দুই ছেলে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুই ছেলে সালাহ খাসোগি ও আবদুল্লাহ খাসোগি তাঁদের বাবার মরদেহের সন্ধান দাবি করেন।
সম্প্রতি তাঁরা সৌদি আরব থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এক মাস আগে তাঁদের বাবার মৃত্যুর পর এই প্রথম কোনো মিডিয়ায় হাজির হয়ে কথা বললেন পরিবারের সদস্যরা।
দুই ছেলে বাবাকে ‘তারুণ্যে নির্ভর এবং চরম সাহসী’ একজন মানুষ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রোববার সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছোট ছেলে আবদুল্লাহ খাসোগি (৩৩) বলেছেন, ‘আমাদের আশা, আমাদের বাবাকে কষ্টদায়ক মৃত্যুর স্বীকার হতে হয়নি। শান্তিপূর্ণ মৃত্যুই হয়েছে।’
তুর্কি সরকার বলছে, রিয়াদ থেকে উড়ে এসে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ১৫ সদস্যের খুনিদল তাঁদের বাবাকে হত্যা করেছে, যার মরদেহের সন্ধান এখনো মেলেনি।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, খাসোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে এসিডে ঝলসে দেওয়া হয়েছে।
বড় ছেলে সালাহ খাসোগি (৩৫) বলেছেন, ‘আমরা আসলে এখন যা চাইছি তা হচ্ছে, মদিনায় জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বাবাকে দাফন করতে।’
এ নিয়ে সালাহ সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান। তিনি আশা করছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
খাসোগি হত্যার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সঙ্গে ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময় তিনি বলেন, খাসোগি ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থক’ ও ‘ভয়ংকর ইসলামপন্থী’ ছিলেন।
মুসলিম ব্রাদারহুডকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্ত্রাসী সংগঠন বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ তেমনটি মনে করে না। মূলত আরব দেশগুলোতে যেসব রাজপরিবার ক্ষমতায় রয়েছে, মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো রাজনৈতিক দল তাদের জন্য সার্বক্ষণিক হুমকি।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আবদুল্লাহ বলেন, ‘এটি এমন লোকের অভিযোগ, যিনি নিজের কাজ ঠিকমতো করেন না।’
আবদুল্লাহ আরো বলেন, ‘জামাল খাসোগি একজন উদারমনা এবং নিজ দেশের সক্ষমতা, সম্মান ও আত্মমর্যাদার প্রতি অত্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাসী একজন মানুষ। সেই হিসেবেই তাঁকে স্মরণ করা হোক। এটাই আমরা চাই।’
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট এবং সৌদি সরকারের, বিশেষ করে ক্ষমতাধর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি এক মাস আগে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর নিখোঁজ হন।