বানরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ, গ্রেপ্তারের দাবি!
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের ডুয়ার্স এলাকায় মোটারাম, গব্বর এবং ছোটা হাতি নামে তিন বানরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করে এদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।
বানরের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে ডুয়ার্সের গরুমারা অভয়ারণ্য-সংলগ্ন পূর্ব লাটাগুড়ি স্টেশনপাড়ার বাসিন্দারা ওই অভিযোগ জানান।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ তিন আসামির নাম দেখে প্রথমে মূল ঘটনা বুঝতে পারেনি পুলিশ। ওই নামে এলাকায় কোনো দুষ্কৃতকারী নেই। ফলে কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ, বুঝে উঠতে পারেনি।
শেষমেশ মূল অভিযোগকারী লাটাগুড়ির ছিটেবেড়া গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর ধীরেন ওরাওকে ডেকে আসামিদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে চোখে শর্ষে ফুল দেখে পুলিশ। জানা যায়, ওই নামে কোনো ব্যক্তি নেই, ওরা সবাই ওই এলাকার বানর।
অভিযোগের কারণ জানতে চাইলে ধীরেন জানান, বাড়ির সামনে রাস্তায়, গাছে গাছে ঘোরাঘুরি করতে থাকা বানরগুলোকে প্রথম দিকে ভালোই লাগত। সে সময় শখ করে সেগুলোর নামও রাখা হয়। তারা কোনো ঝক্কিঝামেলারও সৃষ্টি করত না। কিন্তু সম্প্রতি রাস্তা ছেড়ে সেগুলো বেড়া ভেঙে এলাকাবাসীর ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। ঘরের থালাবাটি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কেড়ে খাচ্ছে খাবার। এমনকি ক্ষেতের ফসলও নষ্ট করছে তারা।
গব্বর, মোটারাম, ছোটা হাতিরা এখন আর হাতেগোনা কয়েকজন নয়। এক থেকে দেড়শ বানর রীতিমতো দল বেঁধে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে সংকটে পড়েছেন তাঁরা।
বন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি বলে জানান ধীরেন। শেষমেশ বাধ্য হয়ে পুলিশে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে বিরল আর অভিনব এ অভিযোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। কেননা ভারতীয় আইনে বানরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের ব্যাপারে কোনো ধারা বা বিধি নেই। তার পরও এলাকাবাসীর ক্ষোভ প্রশমনে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয় ক্রান্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খেশাং লামা বলেন, ‘বানর যেহেতু বন্যপ্রাণী, তাই অভিযোগ পেয়েই আমরা বিষয়টি বন দপ্তরকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা যথেষ্ট চিন্তিত। বানরের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’