ব্রাজিলে ভয়াবহ বাঁধ ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ধসে পড়া খনি ও বাঁধটি ব্রাজিলের সর্ববৃহৎ খনি কোম্পানি ভ্যালির মালিকানাধীন।

মিনাস গেরাইস রাজ্যে ব্রাজিলের কর্তৃপক্ষ ভ্যালির ওপর জোর তদন্ত চালাচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশে কোম্পানির ছাড়পত্র পাওয়া পাঁচ প্রকৌশলী ও বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ কি না, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশকারী সর্বশেষ পরিদর্শনকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে।

মিনাস গেরাইসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র ফ্লাভিও গোদিনহো বলেন, মৃতের সংখ্যা ৬৫ জন থেকে বেড়ে ৮৪ জনে পৌঁছেছে। নিখোঁজের সংখ্যা ২৯২ জন থেকে হ্রাস পেয়ে ২৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের বৃহত্তম লৌহ আকরিক উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান ভ্যালির শেয়ারদর গত সোমবার ২৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তবে সাও পাওলোতে শেয়ারদর প্রায় দুই শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দরপতনের তুলনায় সামান্য।

কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা নতুন করে নির্মাণের জন্য ব্রাজিলের প্রায় ১০টি বাঁধের কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। এগুলো শুক্রবারের ধসে পড়া বাঁধের মতো কাঠামোতেই নির্মাণ করা হয়েছে। আর এর ফলে চার কোটি টন আকরিক লোহা উত্তোলন হ্রাস পাবে।

ব্রুমাদিনহো শহরে ভ্যালির খনির কাছে ওই বাঁধটি ধসে পড়ার প্রায় তিন বছর আগে একই এলাকায় এ ধরনের আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে। মারিয়ানার কাছে ২০১৫ সালের ওই বাঁধ ধসের ঘটনায় ১৯ জন প্রাণ হারায়। ওই ঘটনাকে ব্রাজিলের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে দেখা হতো।

সর্বশেষ দুর্ঘটনার পর রেটিং সংস্থা ফিচ ভ্যালির স্কোর কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া তিনটি মার্কিন ল ফার্ম কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাজিলের গণমাধ্যম ধারণা করছে যে ভ্যালির বোর্ড সদস্য ও শীর্ষ নির্বাহীদের পরিবর্তন করা হতে পারে। এ ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজদের অধিকাংশই মাইনের শ্রমিক।

ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যামিল্টন মোউরাও সোমবার অঙ্গীকার করে বলেন, ‘যদি এ ঘটনায় কোম্পানির কারো অবহেলার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।’