পুলিশ দেখে নিজের মাথায় গুলি করলেন পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট
বাড়িতে পুলিশ আসতে দেখে নিজের মাথায় গুলি করে গুরুতর আহত হয়েছেন পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্সিয়া। পেরুর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে।
ঘুষ লেনদেনের তদন্তে জড়িত থাকায় আদালতের নির্দেশে বুধবার গার্সিয়াকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যান দেশটির পুলিশ সদস্যরা।
ব্রাজিলের নির্মাণ সংস্থা ‘ওডেব্রেশট’র ঘুষ বণ্টনের ঘটনা তদন্তে জড়িত সাবেক এই প্রেসিডেন্টসহ নয়জনকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন আদালত। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুলেমা টমাস জানান, অ্যালান গার্সিয়ার অবস্থা গুরুতর। মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট।
এদিকে অ্যালান গার্সিয়ার কর্মীসমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছেন। সেখানে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যালান গার্সিয়া। দুর্নীতির মামলাকে তিনি শুরু থেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আসছেন। গত বছর তিনি উরুগুয়ের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় উরুগুয়ে তা নাকচ করে দেয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস মোরান বলেন, ‘পুলিশ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি নিজের ঘরে ঢোকেন এবং দরজা বন্ধ করে দেন। এর মিনিট পাঁচেক পরেই গুলির আওয়াজ শোনা যায়। পুলিশ তখন দরজা ভেঙে ওই ঘরে ঢুকে দেখতে পায় তিনি মাথায় জখম নিয়ে বসে আছেন।’
ব্রাজিলের এই নির্মাণ সংস্থাটির বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিটি ২০১৬ সালে প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে, তারা লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ঘুষের বিনিময়ে বড় বড় নির্মাণ প্রকল্পের কাজ নিয়ে থাকে।
অ্যালান গার্সিয়াকে এই মামলায় জেলও খাটতে হতে পারে। এতে এক আসামি নয় মাসের ‘বিচারপূর্ব কারাদণ্ড’ ভোগ করছেন। আরেকজনকে গত সপ্তাহে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওডেব্রেশট কোম্পানির সঙ্গে ঘুষের লেনদেনের দায়ে আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো টলেডোকে ১৮ মাসের জেল দেওয়া হয়েছে।
পেরুতে এক অদ্ভুত আইন রয়েছে, যার বলে বিচারক আসামিকে তিন বছর পর্যন্ত বিচারপূর্বকালীন কারাদণ্ড দিতে পারেন। যদি তিনি মনে করেন যে আসামি এই সময়ের মধ্যে তদন্তকাজে প্রভাব ফেলতে পারে বা পালিয়ে যেতে পারে।