অর্থ ও গাড়ি চুরি করে চার শিশুর হাজার কিলোমিটার যাত্রা!
শিশুদের অর্থ চুরির বিষয়টি না হয় স্বাভাবিক; এমনকি শিশুরা গাড়ি চালানো শিখেছে, তাও মানা যায়। তাই বলে পরিবার থেকে অর্থ চুরি করে পালানোর জন্য গাড়ি চালিয়ে হাজার কিলোমিটার যাত্রা!
হঠাৎ শুনলে যে কারো পক্ষেই মনে হবে, কোনো সিনেমার অংশ। মনে হবে, শিশুদের নিয়ে রচনা করা হয়েছে রোমাঞ্চকর কাহিনী। তবে এসব ঘটনা যে বাস্তবেও ঘটে, তা অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের চার শিশুর কাণ্ড-কারখানা না দেখলে বোঝার উপায় নেই।
ওই চার শিশু তাঁদের পরিবার থেকে অর্থ ও মাছ ধরার বড়শি চুরি করে গাড়ি চালিয়ে পাড়ি দিয়েছে ৯০০ কিলোমিটার।
পুলিশ বলছে, গত শনিবার রাতে অথবা রোববার সকালে ওই শিশুরা কুইন্সল্যান্ডের রকহাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করে।
শেষমেশ অবশ্য নিউ সাউথ ওয়েলসের (এনএসডব্লিউ) গ্র্যাফটনে গতকাল সোমবার পুলিশের কাছে ধরা খেয়েই যাত্রাবিরতি ঘটে ওই শিশুদের।
ওই চার শিশুর মধ্যে তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ে। একজনের বয়স ১৪, দুজনের বয়স ১৩, আর মেয়েশিশুটির বয়স মাত্র ১০। তাদের মধ্যে একজন আবার পরিবারের কাছে বিদায়ী চিঠিও লিখেছিল।
কীভাবে তারা গাড়ি চালিয়ে এতটা পথ পাড়ি দিল, এ প্রশ্ন অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ মানুষেরই। পুলিশ নিজেই এ প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারছে না। পুলিশ বলছে, শিশুদের পক্ষে এতটা পথ গাড়ি চালানো কোনোমতেই সম্ভব নয়।
এনএসডব্লিউ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক ড্যারেন উইলিয়ামস মনে করছেন, হয়তো পালাক্রমে ওই শিশুরা গাড়ি চালিয়েছিল। আর এ জন্যই এতটা পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পথটি কিন্তু অনেক দীর্ঘ, প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। আমি কল্পনাই করতে পারি না, একটি শিশুর পক্ষে এতটা পথ গাড়ি চালানো সম্ভব।’
উইলিয়ামস আরো জানান, গত শনিবার রাতে অথবা রোববার সকালে ওই শিশুরা কুইন্সল্যান্ডের রকহাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করে। তারা বড়শি চুরি করেছিল কারণ, টাকা বাঁচানোর জন্য মাছ খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা।
পুলিশ জানায়, ১৪০ কিলোমিটার যাত্রার পরই রোববার দুপুরের দিকে তাদের গাড়ির পেট্রল ফুরিয়ে যায়। এরপর একটি সার্ভিস সেন্টার থেকে তেলের ট্যাঙ্কও চুরি করে তারা।
মজার ব্যাপার হলো, পুলিশ যখনই তাদের আটক করতে গাড়ি থামায়, তখনই ওই শিশুরা গাড়ির দরজা লক করে রেখে দেয় এবং গাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য অস্বীকৃতি জানায়। তবে পুলিশও নাছোড়বান্দা। গাড়ির কাচ ভেঙেই বের করে আনে চার শিশুকে।
তবে ওই চার শিশুর অভিভাবকরা না আসা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।