অবরুদ্ধ কাশ্মীরে ঈদের নামাজের পর বিক্ষোভ
সোমবার ঈদুল আজহার দিনেও ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে যাতে কোনো ধরনের বিক্ষোভ না হতে পারে সেজন্য সামরিক বাহিনীর অবরোধ জারি ছিল। তবে ভারত সরকারের কারফিউ অবরোধ সত্ত্বেও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় শেষে শ্রীনগরসহ জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কাশ্মীরিরা।
গত ৫ আগস্ট ভারতের সংসদে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়। এজন্য কাশ্মীরে বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন ও কাশ্মীরিদের জনজীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে ভারত। এর প্রতিবাদে কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছে কাশ্মীর।
সংবিধানে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবিতে জম্মু ও কাশ্মীরের ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত উভয় অংশেই এমন প্রতিবাদের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর উঠে এসেছে। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর শ্রীনগরের সৌরায় যেখানে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয় সেখানে আজ ঈদের দিনে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি সত্ত্বেও রাস্তায় নামেন কাশ্মীরিরা। ‘আমরা স্বাধীনতা চাই, আমরা পাকিস্তান বা ভারতের অধীন নই’ বলে তারা সেখানে স্লোগান দেন।
সৌরার জিনাব সাহিব মাজারের কাছে ঈদের নামাজের পর যে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয় সেখানে ১৮ বছর বয়সী আসিফাও অংশ নেন। আসিফা বলছিলেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ায় আমাদের লাভ হবে বলে মোদি জনগণের সঙ্গে মিথ্যাচার করছেন। আমরা শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত এর প্রতিবাদ করে যাব।
বিক্ষোভে ভারত বিরোধী স্লোগানই দেওয়া হচ্ছিল এবং কিছু কিছু পাকিস্তানপন্থী স্লোগানও উঠছিল। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের নজরদারি করতে মাথার ওপর দিয়ে ভারতীয় বাহিনীর হেলিকপ্টার উড়ে বেড়াচ্ছিল, কিন্তু গগনবিদারী স্লোগান হেলিকপ্টারের শব্দকেও ম্লান করে দিচ্ছিল।
শ্রীনগরের বহু জায়গা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। লোকজনকে বাড়ির কাছের মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে বলা হয়। শ্রীনগরের বিখ্যাত ও বড় মসজিদগুলোতে না যেতে বলা হয়।