শান্তি আলোচনার জন্য ‘দরজা খোলা’, ট্রাম্পকে তালেবান
প্রবল রাজনৈতিক সংঘাতপূর্ণ আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার জন্য ‘দরজা খোলা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে প্রভাবশালী জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান বাহিনী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালানোর জন্য তালেবান প্রতিনিধিদের পক্ষের প্রধান শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, সমঝোতাই ‘আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর একমাত্র পথ’।
আফগানিস্তানে ১৮ বছরের সংঘাত শেষ করতে গত ৯ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ও তালেবান নেতাদের সঙ্গে ক্যাম্প ডেভিডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু একদিন আগে হঠাৎ করেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সে বৈঠক বাতিল করে দেন। তিনি তালেবানের সঙ্গে আলোচনাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করেন।
তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা স্থগিত রাখার নির্দেশের কারণ হিসেবে ট্রাম্প কাবুলে ৬ সেপ্টেম্বরের বোমা হামলায় একজন মার্কিন সেনার নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল তালেবান।
তবে শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই মনে করেন, শান্তি আলোচনা বন্ধের পেছনে তালেবানের কোনো ভুল নেই। বিসিসির প্রধান আন্তর্জাতিকবিষয়ক প্রতিবেদক লাইস ডুসেটকে তিনি বলেন, ‘তাদের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের) মতেই, তারা হাজার হাজার তালেবানকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে এই সময়ে যদি একজন মার্কিন সৈন্য মারা গিয়ে থাকে, তাহলে তাদের এই ধরনের প্রতিক্রিয়া মানায় না। কারণ, এই সময়ে উভয় পক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি ছিল না।’
‘আমাদের দিক থেকে সমঝোতার জন্য আলোচনার দরজা খোলা আছে’—উল্লেখ করে তালেবান প্রতিনিধিদের প্রধান নেতা বলেন, ‘সুতরাং আমরা আশা করি, আলোচনার স্বার্থে অপরপক্ষ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’
তালেবানের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে প্রধান ব্যক্তি ছিলেন জালমাই খলিলজাদ। যদিও এই আলোচনার পূর্ণ ও সঠিক বিবরণের খসড়া পাওয়া যায়নি। তবে জালমাই খলিলজাদ বৈঠকের দিন কয়েক আগে ৩ সেপ্টেম্বর এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে চুক্তির কয়েকটি মূল বিষয় তুলে ধরেন। এর মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টিও ছিল। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, আগামী ২০ সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ মার্কিন সৈন্য সরিয়ে নেবে ওয়াশিংটন।
সৈন্য প্রত্যাহারের বিনিময়ে আফগানিস্তানকে ভবিষ্যতে আর কখনোই বিদেশি সন্ত্রাসবাদের ভিত্তিভূমি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে না—এমন অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি ছিল তালেবান গোষ্ঠি।
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই আরো বলেন, ‘আফগানিস্তানে তালেবান ও বিদেশি সৈন্যদের (ন্যাটো) মধ্যে যুদ্ধবিরতি শান্তি চুক্তির পর কার্যকর হবে।’