জলবায়ু পরিবর্তনরোধে বিশ্বজুড়ে লাখো শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে শংকা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এ মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় কমবেশি জলবায়ু পরিবর্তনরোধী আন্দোলন চলছে। আর এ আন্দোলনে সবচেয়ে এগিয়ে আছে স্কুল শিক্ষার্থীরা।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার স্কুল বন্ধ রেখে নিউইয়র্কের লাখ লাখ স্কুলশিক্ষার্থী জলবায়ু পরিবর্তনরোধে বিক্ষোভ করেছে। বিভোক্ষকারীদের মধ্যে গ্রেটা থানবার্গ নামে এক কিশোর কর্মী বলেছে, ‘পরিবেশ বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন মাত্র শুরু করেছি আমরা। এটা চলবে।’
আন্দোলনের সমর্থক এক প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত হুমকির বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। আন্দোলন জোরদার করতে পুরো বিশ্বের ৪০ লাখ মানুষ শহরের রাস্তায় নেমেছে।
নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য বার্লিন থেকে বোস্টন, কমপালা থেকে কিরিবাতি, সিওল থেকে সাও পাওলো পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দেন। তাঁদের স্লোগান ছিল, ‘কোনো বিকল্প গ্রহ নেই’ এবং ‘পৃথিবীকে আবার বসবাসের উপযোগী করুন’।
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ শুরু করতে চলেছেন এক রকস্টার। নিউইয়র্কের ব্যাটারি পার্কে কয়েক হাজার সমর্থক তাঁকে সংবর্ধনা দেন। সে সময় সবাই জানান, নিরাপদ ভবিষ্যত চান তাঁরা।
কার্বন নিঃসরণের হার বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে আছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলো। গতকাল শুক্রবার ভানুয়াতু, সলোমান দ্বীপপুঞ্জ ও কিরিবাতিতে প্রতিবাদ সভা হয়। পরিবেশ রক্ষার জন্য সেখানে শিশুরা চিৎকার করে বলে, ‘আমরা ডুবছি না, যুদ্ধ করছি।’
শিশু-কিশোরা পড়াশোনা বন্ধ রেখে প্রতিবাদে নেমেছে। তারা জানায়, ‘আমরাই আগামীর ভবিষ্যত। ভালো পরিবেশ পাওয়া আমাদের অধিকার।’
সুস্থ পরিবেশের দাবি জানিয়ে ভারতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। অন্যদিকে রাস্তায় নামে ফিলিপাইনের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমাগতভাবে। ভয়াল ঝড়ে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘানার মতো উন্নয়নশীল দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার একটি প্রতিবাদী সংগঠনের সংগঠক এলেন লিন্ডসে আউকু বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে আর কমছে আমাদের বেঁচে থাকার উপায়। এটা প্রতিরোধে আমাদের কোনো সম্পদও নেই।’
এদিকে, বিশ্বের উষ্ণায়ন ও দূষণে মহাসাগর ও তুষারপাত অঞ্চল বিধ্বস্ত হওয়া এবং এই দুর্দশা থেকে বেরিয়ে আসার পদক্ষেপের কথা আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানাবে বলে জানা যায়।