মার্কিন পারমাণু বোমা বিস্ফোরণের ৬০ বছর পরও ছড়াচ্ছে তেজস্ক্রিয়তা!
প্রায় ৬০ বছর আগের পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের চিহ্ন আজও বয়ে বেড়াচ্ছে অ্যান্টার্কটিকা। মহাদেশের বরফ থেকে এখনো নির্গত হচ্ছে তেজস্ক্রিয় ক্লোরিন গ্যাস।
১৯৪৫ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকায় এক হাজারেরও বেশি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা চালায় মার্কিন সামরিক বাহিনী। বরফাচ্ছন্ন অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের ভোস্টক অঞ্চলের বরফে একটি বিশেষ ধরনের তেজস্ক্রিয় ক্লোরিন— ক্লোরিন-৩৬—পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন একদল বিজ্ঞানী। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল এ খবর জানিয়েছে।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে ৬০ বছর আগে মার্কিন সামরিক বাহিনী পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালালে এই উপাদানটি বরফের মধ্যে আটকা পড়ে এবং সেখান থেকেই এই তেজস্ক্রিয় ক্লোরিন এখনো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে ওই গবেষকদের দাবি, এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।
অ্যান্টার্টিকার দুটি এলাকায় কয়েক দশক ধরে তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ে গবেষণা চালান ফ্রান্সভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড টিচিং ইন জিওসায়েন্সেস অ্যান্ড দি এনভায়রনমেন্ট’-এর একদল গবেষক।
গবেষণা চালানো দুটি অঞ্চলের মধ্যে ট্যালোস ডোম এলাকায় তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হলেও ভোস্টক অঞ্চলে ক্লোরিন ৩৬-এর তেজস্ক্রিয় নিঃসরণের উচ্চ হার লক্ষ করেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৪৫-৯২ সময়ের মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাজারো পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার মধ্যে ২০০টির বেশি বোমার পরীক্ষা চালানো হয় উন্মুক্ত পরিবেশে। বিমান থেকে ফেলে কিংবা কোনো দ্বীপে নতুবা বরফের স্তরের সামান্য নিচে রেখে এসব পরীক্ষা চালানো হয়।
তবে গবেষকদের দাবি, উচ্চমাত্রায় মজুদ থাকলেও এই ক্লোরিন গ্যাস ক্ষতিকর নয়। তবে চমকপ্রদ বিষয়টি হলো, বোমা বিস্ফোরণপরবর্তী সময়ে অন্যান্য তেজস্ক্রিয় উপাদানগুলো বিস্ফোরণপূর্ব অবস্থায় ফিরে গেলেও ক্লোরিন-৩৬ এখনো তেজস্ক্রিয়তা নিঃসরণ করে যাচ্ছে।