বিপ্লবী বন্ধুকে হারিয়ে ব্যথিত ম্যারাডোনা
ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা মুষড়ে পড়েছেন শোকে। সারা বিশ্ব জানে বিপ্লবী মহানায়ক ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে ম্যারাডোনার বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কেবল বন্ধুত্ব? ম্যারাডোনাকে আবারও জীবন দিয়েছে ফিদেলের কিউবা। আর ফিদেলই ছিলেন সেই বন্ধু যার কাছে ম্যারাডোনা ছিলেন ফুটবল মাঠের মতোই স্বচ্ছন্দ।
ফিদেলকে নিয়ে নিজের ফেসবুক পাতায় ম্যারাডোনা লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু, আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু। তিনি আমাকে উপদেশ দিতেন। রাজনীতি, ফুটবল, বেসবল নিয়ে আলোচনা করার জন্য যেকোনো সময় তিনি আমাকে ডাকতেন।’
ম্যারাডোনা আরো লেখেন, ‘ফিদেল কখনো ভুল ছিলেন না, আমার জন্য তো কখনোই না। ফিদেল শাশ্বত, মহান। আমার হৃদয় আজ ব্যথিত, কারণ বিশ্ব হারিয়েছে প্রাজ্ঞজনকে।’
খেলাধুলাবিষয়ক স্প্যানিশ পত্রিকা মার্সা জানিয়েছে, ফিদেলের প্রিয় খেলা ছিল বেসবল। কিন্তু ক্রীড়াজগতে একজন ব্যক্তিকেই সবার সামনে তুলে ধরতেন ফিদেল- তিনি কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা।
ম্যারাডোনা প্রথম কিউবা যান ১৯৮৭ সালে। তখন থেকেই বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে ম্যারাডোনার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক।
ফিদেল কাস্ত্রোকে নিজের পরা অনেক জার্সি উপহার দিয়েছেন ম্যারাডোনা। আর ম্যারাডোনার ১০ নম্বর জার্সি বিশ্বে কত জনপ্রিয় তা ফুটবল-পাগল মানুষ মাত্রই জানে।
ম্যারাডোনার জন্য কিউবার দরজা ছিল সব সময় খোলা। ম্যারাডোনা সহজেই ওই দেশে আসা যাওয়া করতেন। মাদকাসক্ত হয়ে, শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ বিপদে পড়েছিলেন ম্যারাডোনা। প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলেন। ২০০০ সালে কিউবাই ম্যারাডোনার পাশে দাঁড়ায়। কিউবার বিখ্যাত লা পেরদেরা ক্লিনিকে চিকিৎসা হয় ম্যারাডোনার। দুর্দান্তভাবে আবারও নতুন জীবনে ফিরে আসেন ম্যারাডোনা। শুরু করেন ফুটবল নিয়ে কাজ। ২০১০ সালে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ হয়েও কাজ করেন ম্যারাডোনা।
ম্যারাডোনা বিপ্লবী ফিদেলের একটি সাক্ষাৎকারও নেন। ‘লা নচে দেল ১০’ নামে আর্জেন্টিনার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ওই সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। ওই অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন ম্যারাডোনা নিজেই।
প্রচুর চিঠি আদান-প্রদান করতেন ফিদেল ও ম্যারাডোনা। ২০১৫ সালে এ রকম কিছু চিঠি প্রকাশ করেন ফিদেল নিজেই।
এক চিঠিতে ম্যারাডোনা লিখেছেন, ‘ফিদেল, আমাদের অসাধারণ বন্ধুত্বের সম্পর্কে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আমি আপনার কাছে শিখেছি। সেটা হলো, বিশ্বাস অমূল্য।’