সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/03/04/photo-1425447766.jpg)
‘আসমান জমিন কাঁপে কান্দনের রোলে’
আন্ধাগোন্ধা চিক্কুর দিতে দিতে কেমনে জানি- আচমকা- মংলার মায়ের মাথায় আসে যে, যত কি না সেয় এই ছাড়া-বাড়িতে চিল্লাক; সেই আওয়াজ গেরামের কোনো লোকের কানেই পৌঁছাবে না। দেওভোগ গেরাম ঠাকুর-বাড়ির কাছেই, কিন্তু ডাক-চিৎকার পৌঁছানির মতন কাছে না। সেয় তবে করবোটা কী!
এই চিন্তা নিয়া হাতপাও তার ঠকঠকাতে থাকে ঠিক, কিন্তু বুদ্ধিখান থির হয়ে যায় পলকে। একলা সেয় কতখোন খাড়াইয়া থাকবো এই নিরালা, সর্বনাইশ্যা পুরীতে! আর দেখো সারা পুরী ঠাণ্ডা, সুমসুমা; কিন্তুক ঘাটলার কিনারের বকুলগাছের পাতারা কেমুন ছুপছুপানি আওয়াজ দিতাছে! একবার সেই আওয়াজরে মনে লাগতাছে বাতাসের ঝাপট, একবার কানে লাগতাছে য্যান হায়-হুতাশ! ‘আহা! আহা! ইইসসি রে!’ এমুন আফসোস য্যান করতাছে গাছের পাতারা। বিরাম সিরাম না দিয়া কইরা যাইতাছেই! সেই আওয়াজে মংলার মায়ের খালি শইল্লেই কাঁটা দিতাছে না, চিত্তিও ধাক্কা খাইতাছে।
ডরভয় সঙ্গে নিয়া তাও কোনোমতে মংলার মায়ে ঘাটলায় পড়ে থাকা গামছাখানা তোলে। যেমনে রক্ত নামতাছে জুলির মায়ের মাথা থেকে, তারে আটকানের ব্যবস্থা না করলে মানুষটার বিপদ হইবো! গামছারে সেয় কোনোপ্রকারে খালি বান্ধে জুলির মায়ের মাথায়, তারপর দৌড় দেয় গেরামের দিকে। লোকেরে তো খবরটা দেওন লাগে! নাইলে এই মাতারি কতখোন এমনে পইড়া থাকবো! এই ছাড়াবাড়িতে- থাকলো অহন জুলির মায়ে, খোদার হাতে!
এদিকে দেখো, এই দুপুরের কালে, গেরামের পুরুষপোলারা একটা জনেও ঘরে নাই! একটা বেটা নাই কোনো বাড়িতে, যে কি না আইসা অই দাঁতি-খাওয়া মাতারিটারে আলগি দিয়া বাড়িতে নিয়া যায়! অখন কী উপায়!
এই সময়ে রোজকার মতোই, গ্রামে লোক বলতে- ঘরে ঘরে আছে খালি বৌ-ঝি, আণ্ডাবাচ্চা, মা-চাচিরা। বিপদের সংবাদখান শোনা মাত্র, তারাই সকলে আউলা-পাথাইল্লা ছুট দিয়া আইসা খাড়া হয় ঠাকুরবাড়ির ঘাটলায়। হায় হায় হায়! জুলেখার মায়ে নি এমুন দাঁতি খাইয়া পইড়া রইছে এমুন আজায়গায়! এইখানে আসছে ক্যান সেয়! এমুন বিপদ কেমনে বান্ধাইলো জুলেখার মায়ে!
গ্রামে চিরদিন সকলের বিপদবালাই যা আসছে, তা আসছে নিজের ঘরে। জন্মেও তো কেউ কোনোজনরে এমুন সদর জায়গায়- এমুন বিপদের ফেরে পড়তে দেখে নাই! আজকা এইটা কী ঘটল! এইটা হইছে কী! অমন আচানক বিপদের সামনে খাড়া হয়ে, ছোটো-বড়ো সকলের শরীরের রক্ত য্যান জমাট বাইন্ধা যায়।
তবে তাগো অই তবদা দশাটা বেশিক্ষণ থাকে না। বকুলগাছের পাতাদের ছুপ্পুর-ছাপ্পুর হায়-হুতাশের ধীর-আওয়াজ ক্রমে, সবারই কানে এসে কড়ড়া থপ্পোড়-চটকনা দিতে থাকে। সকলেরই মন সকলরে জানান দিতে থাকে যে, জুলেখার মায়ের বিপদ নিয়া অমন হুঁশহারা হয়ে খাড়া দিয়া থাকার জায়গা এটা না ! জলদি জলদি তাগো এই জায়গা ছাইড়া যাওন দরকার। তার আগে দরকার এই দাঁতিখাওয়া মানুষটারে হুঁশে আনন!
ঘাটলায় লেট দিয়া বসে গ্রামের মা-চাচিরা জুলির মায়ের দাঁতি খোলার চেষ্টার কোনো কমতি রাখে না। নাকে-মুখে পানির ছিটা দিতে দিতে তাগো একেকজনের হাত বেবোধা হয়ে যায়, কিন্তু জুলির মায়ে চোখ খোলে না। শেষে কয়জনে মিলে মাথায় পানি ঢালা সাব্যস্ত করে। পানির ঠাণ্ডাটা মাথায় লাগলে যদি হুঁশ আসে! লোটার পরে লোটা পানি পড়তে থাকে মাথায়। কিন্তু কিসের কী! কিছুতেই কিছু হয় না। জুলেখার মায়ে যেই বেহুঁশ সেই বেহুঁশই পড়ে থাকে। যেমনকার দাঁতে দাঁতে দাঁতি লাগা, তেমনই থাকে। ও মাবুদ! কী গজবের তলে পড়ল আজকা দেওভোগ গেরামে!
হঠাৎ তাগো অস্থির অন্তরে ছলাৎ করে ওঠে অন্য আরেক ডর! জুলেখার মায়ে দাঁতি খাইছে, নাকি মউতে নিছে গা তারে! জান বাইর হইয়া যায় নাই তো জুলির মায়ের! নাইলে এত চেষ্টা চলতাছে, হের দাঁতি খোলে না ক্যান! আরো লোকে তো দাঁতি খায়, তাগো জ্ঞান ফিরতে এতক্ষণ তো লাগতে দেখা যায় নাই কোনো সময়! নাকে মোখে খালি পানির ছিটাটা পড়ে তাগো, লগে লগে দাঁতি ছুইট্টা যায়।
জুলেখার মায়েরে তো পানি দিয়া জবজবা কইরা ফালান হইতাছে, হের তো জ্ঞান আওনের লক্ষণই নাই! হায় হায়! মইরা গেছে নি এই মাতারি! এই চিন্তা মনে আসা মাত্র মা-চাচি সকলে নিজেগো শইল্লে আর লড়াচড়ির শক্তি পায় না। কীয়ের তেনে কী হইয়া গেছে এইটা! এখন কী উপায়! তারা একজন আরেকজনরে মুখে মুখে ঠেলতে থাকে জুলির মায়ের নাকের সামনে হাত দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনোজনই লড়ে না।
প্রত্যেকে প্রত্যেককে বলতে থাকে, ‘আলো মা, যাস না! যা। দমটা আছে নি দেখ! জুলির মায়ের নাকের সামনে হাত দিয়া দেখ, দম আছে, না নাই!’ কিন্তু সকলেই টের পায়, তারা নড়বো কী! শরীর য্যান তাগো শরীরে নাই। অবশ-অসাড় -ভারী একখান শিলপাটা হইয়া রইছে সকলের দেহ! এক পাও লড়ে সেই খ্যামতটুকও নাই কারো ভিতরে!
দম পড়াপড়ি দেখার জটিল কর্মখানা তবে করে কে তখন! সেই কর্ম করতে পোলাপানগুলি ঝম্প দিয়া নামে! তারা একজনের পরে আরেকজন এসে দম যাচাই করতে থাকে। কিন্তু কেউই স্পষ্ট বোঝে না- দম আছে, না নাই! পড়তাছে নাকি পড়তাছে না! অহন উপায়!
উপায় আছে। নাকের সামনে আরশি ধরলেই বোঝা যাবে দম পড়ে কী পড়ে না! একখান আরশিও নিয়া আসে একজনে একছুটে। মুরুব্বিরা কয়জনে মিলে সেই আরশি আঞ্চল দিয়া ভালামতো মোছে, আর পরখ করে। সঠিক মতোন সাফ কী হইলো! আরশি ঘোলা থাকা চলব না! থাকতে হবে ঝকঝকা। তবে যদি তারে নাকের সামনে ধরা যায়।
যদি দম থাকে, তবে ফকফকা আরশিখান ঘোলা হবে তখন। ঘোলা না হইলেই বোজোন যাইবো যে, বিপদ ঘইট্টা গেছে! তবে এই শেষ পরীক্ষাখান করার কাজে তারা পোলাপানদের হাত লাগাতে দেয় না। মরোণ-বাঁচনের বিষয় পোলাপানে কী বুঝব!
জুলেখার মায়ের নাকের সামনে আরশি নিয়া ধরে মা-চাচিরা! ধরে, তারা সকলে বেধুম জালালি দোয়া পড়তে থাকে। একদিকে দোয়া পড়তে থাকে, আরেকদিকে আপনা আপনি তাগো চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কেন জানি পরানে ডর ঢুকে যায় আবার তাদের। সেই ডরে তাগো একজনও চোখ মেলা রাখতে পারে না। খোদা গো, কোন সর্বনাশরে না জানি দেখোন লাগে- এই পোড়া চক্ষু দিয়া! এমন চিন্তায় কাঁতরানি দিতে দিতে তাদের চোখেরা ধুপধাপ বন্ধ হয়ে যায়।
শেষে, দম আছে কী নাই- সেই ব্যাপার দেখার জন্যও জাগনা দিয়া থাকে সেই গুঁড়া-গাঁড়া পোলাপানরাই। বড়োরা লেট দিয়া বসা, তাগো মাথার ওপর দিয়া উপুড় হয়ে ঝুঁকে থাকা পোলাপানেরা স্থির নজর দিয়া রাখে আরশিখানে।
এমন আচরিত ঘটনা তাগো গেরামে কবে আর ঘটছে! কবে আর কে দেখছে- আরশি দিয়া এমুন দম দেখোনের বিত্তান্ত! কেউ কোনোদিন দেখে নাই। এই সব কেবল তাগো শোনা কথা আছিল! অহন তারে চক্ষের সামোনে হইতে দেখতাছে পোলাপানে! সেই আচানক বিষয়রে দেখতে দেখতে তাদের চক্ষু, পলকটা ফেলতেও ভুলে যায়।
দম আছে কী নাই! আছে? চোখখোলা রাখা সেই পোলাপান কয়টা দেখে যে, আস্তে; অতি ধীরে- আরশিখান য্যান ঘোলা হয়ে যাইতাছে! ক্রমে ঘোলা দেখায় য্যান আরশিখানারে! তাগো ছটফটানি দিতে থাকা পরান চাল্লানি দিয়া ওঠে, ‘দেহেন! দেহেন! দম পড়তাছে হের! দম পড়তাছে!’
বড়রা ধুছমুছ চোখ মেলান দেয়। আছে! বাইচ্চা আছে! এইবার তো, জুলির মায়েরে বাড়িতে নেওয়ার ব্যবস্থা করন লাগে! এইবার এরে ঘরে নিয়া হাতে-পায়ে গরম শেক দেওয়া লাগবো। এমনে তারে আর পইড়া থাকতে দেওন যাইবো না। শেষে আবার কোন বেহিত কারবার না ঘটে!
আর, এমনে কতখোন তারা সবটিয়ে, গ্রামের সকল আণ্ডাগণ্ডা, মাতারি এই ছাড়াবাড়ির পুকুর ঘাটলায় পইড়া থাকবো! ঘর-সংসার আউলা হইয়া রইছে না একেকজোনের? তারা জানে, পুরুষপোলাগো আসার জন্য বইসা থাকোন বৃথা! হেরা কোনজন কোনসময়ে আসবো, তার কোনো আগামাথা নাই। ততখোন কী এই মাতারিরে এমনে ফালাইয়া থোওন যায়! যায় না। পাড়াপড়শী মা-চাচী মুরুব্বিরা ফায়সালা করে যে, যেমনেই হোক জুলির মায়েরে বাইত নেওন লাগবো তরাতরি। নিবো তারাই সগলে ধরাধরি কইরা।
এট্টু কষ্ট হইবো, কিন্তু পারবো তারা। আর, আপদ-বালাইয়ের দিনে কষ্ট না নিয়া উপায় কী! তখন, গেরামের মা-খালা, বইন-ভাউজেরা আলগানি দিয়া তোলে জুলেখার মায়েরে। পোলাপানটিও মুরুব্বিগো লগে হাত লাগায়। ধীর হেঁচড়ানি দিতে দিতে, হাপ্পুর-হুপ্পুর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে, সকলে, পালা করে করে কোনোমতে দাঁতি-খাওয়া মানুষটারে ঘরে নিয়া তোলে।
অতো সব হুজ্জোতে সকলে অস্থির থাকে বলে, কারো খেয়ালে আসে না যে, মায়ের এমন বিপদের ক্ষণে মাইয়া জুলেখারে কিন্তু আশপাশে দেখা যাইতাছে না! মংলার মায়ে ঠাকুরবাড়ির ঘাটলায় পড়া কাঁসার লোটাখান হাতে নিয়া সকলের পিছে পিছে আসে। সকলের চিল্লামিল্লির সামোনে সেও এমন ফাঁকটা পায় না যে, একজোন কাউরে সেয় ভাইঙ্গা বলে সবকথা! কী থেইক্কা কী হইছে- সেই কথা দশজোনরে জানানি দেওনের লেইগা তার আপোড়-ফাপোড় লাগতে থাকে। কিন্তু কওয়ার ফুরসত আসে না।
জুলেখার মায়ের হাতে-পাওয়ে গরম সরিষার তেলের মালিশ দিতে থাকে একেকজোনে। মাথায় বান্ধা গামছারে খুলে সরু তেনার শক্ত পট্টি বান্ধা হয়, পোক্ত রকম। ধীরে মাথার রক্তপড়া বন্ধ হয় একদিকে, আরেকদিকে তার হিমশীতল হয়ে যাওয়া শরীরখানা আস্তে আস্তে গরম হয়ে উঠতে থাকে। সকলে বোঝে যে, আর বিপদ নাই। এখন জ্ঞানখান আসলেই আর চিন্তা থাকে না।
ক্রমে বেইল দুপোর ছাড়াইয়া ভাটির দিকে যাওয়া ধরে। আর কতখোন এই বেহুঁশরে পাহারা দিবো অন্যবাড়ির লোকে! জুলেখায় কই! মুরুব্বিগো এইবার জুলির কথা মনে আসে। ছেমড়িটায় কই! এইবার সেয় আইসা মায়ের লগে থাকুক। গেরামের সকলে তো করছে এতখোন! এইবার ঘরের লোকেরে তো দেখতে হইবো ঘরেরই মানুষের! মাইয়ায় এহন মায়ের ভালাবুরাখান দেখুক! জুলেখায় কইগো!
নানাজনে নানামতে ডাক পাড়ে; কিন্তু কেউ কোনোদিকে জুলেখার ছায়াখানাও দেখে না! ‘কেমুন মাইয়া এইটায়! কই গিয়া রইছে মায়েরে থুইয়া!’ জুলেখার কীর্তি- ব্যবহারে মুরুব্বিগো চেতে ওঠে । ‘ছেমড়ির দিলে য্যান দয়া-রহমত কম দিছে খোদায়! গেছে কই! দ্যাখছ, কোনোখানে মাইয়ার ছেমাটা নি চক্ষে পড়ে!’ জুলির মায়েরে রেখে কেউ কেউ তখন জুলির স্বভাব-খাসলত নিয়া হাঁকাহুকি শুরু করে।
মংলার মায়ে থাকলে সকলের কাছে ভেদের কথাখান সে তখনই ভাঙ্গতে পারত। কিন্তু সেয় তখন কি না গেছে কোঁচড়ের গিমাশাকের একটা গতি করতে। ঠেকার কাম। সেটা সে বন্ধ রাখে কোনপ্রকারে! সে উপস্থিত না থাকার কারণে, দরকারের সময়ে আসল কথাখান গ্রামের কোনোজোনেরই জানা হয় না। মংলার মায়েরও ভেদের কথাখান কওয়ার বাসনা পুরা হয় না।
বিকেল হয় হয় সময়ে- জুলেখার বাপে বাড়িতে পাও দেয়। সেয় জানে তার বাড়ি চিরকাল নিরা-ছাড়া, ঠায়-ঠাণ্ডা বাড়ি। আজকা দেখি সেই বাড়ি লোকে গমগম করে! ঘটনা কী! বাড়িভরা নানান বাড়ির সকল মুরুব্বিরে দেখা যায় ক্যান! মা-চাচিরা সগলতে এইনে কী করে! কী হইছে! তরাসে গলা উঁচা হয়ে যায় জুলেখার বাপের; ‘কী হইছে গো মায়েরা? বাড়িত হইছে কী?’
আল্লার কী কুদরত! জুলেখার বাপের গলা থেকে কথা বাইর হয়েও সারে না, জুলেখার মায়ে তক্ষণ তক্ষণ হুঁশে আসে। মনে হতে থাকে য্যান অই স্বরের একখান ধাক্কা পাওয়ার জন্যই চেতনাখানা বার চাইতাছিল।
‘আপনে আইছেন?’ নিজের ভালামন্দের দিকে চাওনের হুঁশ থাকে না জুলেখার মায়ের; ঢেক্কুর তুলে কান্দন দিতে দিতে সেয় জিগায়, ‘জুলি কো? বাইত আইছে? ঘরে আইছে নি সেয়?’
‘কী কও! কী কও জুলির মা! মাইয়া কই যাইবো!’
ওগো হোনেন গো! আমার মাইয়ায় নাই! নাই! দুপোর তেনে তারে দেখতাছি না কোনোখানে!
‘কী আজাইরা কথা কও জুলেখার মা! কী কইতাছ এটি!’ বাপে য্যান খাড়া থাকার শক্তি পায় না। কাঁপতে কাঁপতে সেয় চৌকি মনে করে বসতে গিয়ে মাটিতে থ্যাপসে পড়ে যায়। কী গজবের কথা কয় এই মাতারি! আমার মাইয়ায় কই যাইবো!
সেই চৈত মাইস্যা বৈকালে, মায়ে-বাপের ডাক-চিৎকারে দেওভোগ গ্রামের আসমানজমিন ফালাফালা হতে থাকে।
‘খোদা-মাবুদ!’ জুলেখাগো ঘরে এবং উঠানের আশপাশে খাড়া দিয়া থাকা গেরামের মুরুব্বি মা-চাচির শরীরে অন্য আরেক প্রকারের অচিন ডর ঝনাৎকার দিয়া ওঠে। তারপর ঝনঝনাতে থাকে, ঝনঝনাইতেই থাকে বিরামহীন। ‘এইটা কী হোনে সগলতে! সাব্যস্ত একটা মাইয়া নাই হইয়া গেছে! একটা আস্তা সিয়ানা মাইয়া গায়েব হইছে! এইটা নি বিশ্বাসের কতা!’
‘জুলির মায়ে এটি কী কয়! কই যাইবো মাইয়া! এই গেরামে এমুন কথা কোনোদিন নি কেউ শোনছে! কোনোজোনে শোনে নাই! এমুন ঘটনা ঘটছে জিন্দিগিতে? ঘটে নাই। কোনোকালে ঘটে নাই! এমন গজব তো কোনোদিন নামে নাই এইনে, যুগজনমে কোনোসময়! হায় হায়!’
(চলবে)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৯)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৮)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (সপ্তম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (ষষ্ঠ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (পঞ্চম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (চতুর্থ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (তৃতীয় কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (দ্বিতীয় কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (প্রথম কিস্তি)