সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/13/photo-1431496850.jpg)
ক্রমে দেওভোগ গ্রামে দিন যাইতে থাকে। সুরুজের নিয়মে সুরুজ ওঠতে থাকে, ডোবতে থাকে। রাইত আসতে থাকে, যাইতেও থাকে। তবে, জুলেখায় নাই হইয়া যাওনের পরের একটা বছর বহুত পেরেশানিতে থাকে দেওভোগ গেরামের মানুষ।
জুলেখায় হারানি গেছে একদিগে; আরেক দিগে দেখ তাগো ছায়ছোট্ট গেরামখানের ভিতরে-বাহিরে ডরের রাজত্বি শুরু হইছে! কত পদের ডর যে আইসা তাগো থেঁতলাইতে থাকে, তার লেখাজোখা নাই! ডরে তামানটা বছর গেরামের প্রতিটা জনে হয়রান-লবেজান হয়ে যায়।
গেরামের পোলা বুড়া ছেড়ি মাতারি সগলতে কেবল ডরাইতে থাকে আর ধোক্কা খাইতে থাকে।
ক্যান ডরায় তারা!
এই যে আস্তা জুয়ান ছেড়িটা নাই হইল! তার যে কোনো বিহিত হইল না, এইটা ডরের বিষয় না? আর যে তার সন্ধানটা পাইল না কোনোজনে- এই এক কারণে ডর তো আছেই! লগে আছে আরেক ডর। সেইটা এক গুপ্তি ডর। কেউই কেউরে সেই ডরের বিষয়টা ভাইঙ্গা বলে না। কেবল মনে মনে ডরাইতে থাকে।
মনে মনে সগলতে খোনে খোনে এই ডরে গুমরাইতে থাকে যে, একজোন তো গেছে! আবার নি অন্য আরেকজোন কেউরে এমুন নাই হওন লাগে! আবার না কোনজনে জানি নাই হইয়া যায়! ক্রমে না একে একে সগল ভিটির তেনে আন্ডা-বাচ্চা একে একে অমুন খোয়ানি হইতে থাকে!
আরেকখান গোপন ডরও সগলতেরে থাবড়া মারতে থাকে প্রায় প্রায়। এই ডরখান আসে ইসুফ মিয়ার বিমারটা নিয়া! দেওভোগ গেরামে এইবার এইটা কিমুন কারবার ঘটল! শীতলা বিবির দয়া আইল তো আইল, কিন্তুক সেই দয়া থাকল খালি একজোনের লেইগা! শীতলা বিবি গেরামের আর কোনোজোনরে দয়া দেখাইল না। দেখাইল কেবল একজোনরে! এইটা কী!
এক খালি একলা ইসুফ মিয়ারেই ঝাটকা বাড়ি মারল শীতলা মায়ে, তার বাদে মানে মানে গেল গা সেয়! এইটা অশৈলী বিত্তান্ত না, তয় কী! এমুন কোনোকালে হইছে? চিরকাল ঘরে ঘরে লোকে একলগে শীতলা মায়ের দয়া পাইয়া আসছে। বাঁচছে মরছে একলগে! এমুনটা হওয়াই নিয়ম। এইবার ক্যান সেই নিয়ম খাটল না!
এমুন নিয়ম-ছাড়া বিষয়রে চক্ষের উপরে ঘটতে দেখব লোকে, আর ডরাইব না? লোকের পরান পাত্থর দিয়া বান্ধাইন্না না!
এই সবটি ডর কইলজার ভিতরে নিয়া, লোকে, কোনোমতে তাগো দিন গোজরান করতে পারত, কিন্তু আচমকা দেখ আরো কী ডরের কারবার শুরু হয়! সেই ডরের বিত্তান্তখানে আইসা করল কী- লোকের জিন্দিগি পুরা অচল বানাইয়া ছাড়ল!
কী সেই বিত্তান্ত?
হইছে কী, গেরামের এক বাড়ির জুয়ান বৌয়ে, একদিন, এমনে এমনেই গিয়া খাড়াইছে ভিটির কোনো এক মুড়ায়। নিরালা জায়গা। দোপোরের কাল। তখন রইদ যেমুন তেজি, বাতাস তেমুন তপ্ত। খালি গাছের ছেমায় খাড়াইলে শান্তি শান্তি লাগে। সেই শান্তিতে সেয় খাড়াইয়াও সারে নাই, দেখে এক আশ্চর্য বেপার!
সেয় নিজের চক্ষে দেখে যে, তগতগা লাল পাইড়ের একখান সাদা কাপড় পিন্ধা কে জানি হাইট্টা যায় তাগো বাড়ির উত্তর ভিটির নামা দিয়া। আল্লা আল্লা! অমুন কাপড় দেওভোগ গেরামের কোনো মাতারিরে কোনো কালে পিন্ধতে দেখা যায় নাই। জীবনেও কোনো ভিটির কোনো দাদি-নানি, মা-খালা-চাচী কী বৌ-ঝি অমুন সাদা কাপড় পিন্ধে নাই কোনোদিন। কেমনে পিন্ধব! এমুন লাল-পাইড়া সাদা কাপড় পিন্ধনের রেওয়াজ নাই-ই এই গেরামে!
তাইলে এটা কে! কে এমুন ভরভরা দোপোইরা বেইলে, তাগো ভিটির নিরালা নামা দিয়া হাঁটে! কেটায় গো? কইত্তেনে আইছেন? কাগো বাইত যাইবেন? সেই লাল-পাইড় সাদা কাপড় পিন্ধইন্না মাতারিরে এই তাই নানান কথা পিছের তেনে জিগাইতে থাকে দেওভোগ গেরামের অই বৌয়ে। কিন্তু মাতারি কোনো জব দেয় না। সেয় যেমুন হাঁটা দিতাছিল, তেমুন হাঁটা দিয়াই যাইতে থাকে।
এইটা কেমুন মাতারি! এত ডাক পারি কানে তোলে না! ঘাড়টা তরি ফিরায় না! বাইদ্যানি আইছে নি এমুন একলা? বাইদ্যানির বোলে এমুন টোমর! বৌয়ের চেত ওঠে। সেয় ফিরা আবার ডাক দেয়, কেটায় গো আপনে? কথা কানে তোলেন না! অই মাতারি!
এই ডাকটা বোলে বৌয়ে দিয়াও সারে নাই, অমনেই সেয় দেখে যে কিয়ের মাতারি কিয়ের কী! ভিটির নামায় একটা কাউয়া তরি নাই! কী দেখল কী দেখল এইটা সেয়! বিষয়টা ভালা মতন যেই তার খেয়ালে আসে; অমনেই সেয় ডাক-চিক্কুর দিয়া দাঁতি খায়।
বাড়ির লোকে যেয় যেইখানে থাইক্কা সেই চিক্কুর শোনে; সেয়ই ডরে চমকানি দিয়া ওঠে। ডরে সগলতেরই দাঁতে দাঁতে বাড়ি খাইতে থাকে। সেই অবস্থা নিয়াই কোনো প্রকারে হেচোড়-পাচোড় করতে করতে ভিটির সেই দিগে আসে একেকজনে। আইসা দেখে বিপদ ঘটছে! ঘরের বৌ দাঁতি খাইয়া মাটিতে পড়া! হায় হায়!
সংবাদখান তুরুত গিয়া পৌঁছায় ইমাম হুজুরের কাছে। কাগো বাড়ির বৌয়ে দেখছে এমুন অশৈলী জিনিস? গেদা মিয়ার পোলার বৌয়ে। ইমাম হুজুরে তরাতরি সেই বাড়িতে গিয়া উঠানে বহা দেয়। বৌয়ে হাছা দেখছে, না মিছা দেখছে! চক্ষের ভুল আছিল না তো ঘটনাখান! কিন্তু বাড়ির কেউই ঘটনাখান খোলাসা কইরা কইতে পারে না। তারা খালি কয়, কী জানি দেইক্ষা ডরাইছে বৌটায়!
‘কি জিনিস দেখছ গো তুমি, মা? ডরাইছ ক্যান?’ পানিপড়া খাওয়াইতে খাওয়াইতে হুজুরে জিগায়। ‘আমারে ভাইঙ্গা কও।’
কতখন বেদিশা চক্ষে হুজুরের দিগে চাইয়া থাকে বৌয়ে; তারবাদে আঁতকা কান্দন জোড়ে সেয়।
কী হইল কী হইল?
না, ডরে বৌয়ের পরান থরবরাইতাছে!
বৌয়ের মুখে সকল বিত্তান্ত শোনতে শোনতে বাড়িত আসা সগলতের শইল্লে খোনে খোনে কাঁটা দিয়া উঠতে থাকে। সকলতের অন্তর হিম হইয়া যায়।
সেই হইলো শুরু! এরপর দেওভোগ গেরামে একেকটা দিন যায় না,য্যান একেকটা তুফান যায়। যেদিন দোপোরে গেদা মিয়ার পোলার বৌয়ে সেই লাল-পাইড়ের কাপড় পিন্ধা মাতারিটারে দেখে; তার ঠিক পাঁচ দিনের দিন তিনসন্ধ্যার কালে; টুনু মিয়ার মায় দেখে তাগো ভিটিতে ওঠার মুখে যে আমগাছখান আছে, তার নিচে জানি কে খাড়া! কেটায়!
খাড়া এক মাতারি। তার পিন্ধনেও সেই তগতগা লাল-পাইড়ের সাদা কাপড়। তয় এইবার সেয় হাঁটতাছিল না। আছিল খাড়া। খাড়া হইয়া সেয় য্যান চাইয়া আছিল টুনু মিয়ার মায়ের দিগে! টুনু মিয়ার মায়ে য্যান পষ্ট দেখছে, সেই মাতারি দুই হাতে তার কাপড়ের আঁচল টুনু মিয়ার মায়ের দিগে বাড়াইয়া দিয়া কী জানি চাইতাছিল! হায় হায়! কী সর্বনাইশ্যা কথা!
এরপর গেরামের সকল মা-বৌ-ঝিয়েরে দেখা দেওয়া শুরু করে সেই মাতারি। সকল সময় সেই সাদা কাপড়ই তার পিন্ধনে। সেই একই রকম তগদগা লাল সেই কাপড়ের পাইড়! সেইটা এমুন তুক্ষার লাল যে, চক্ষে আইয়া ঝাপটা মারে। চোখ আন্ধার হইয়া যায়।
ক্রমে ক্রমে তারে গেরামের এয় দেখে সেয় দেখে। সকালে দেখে বিকালে দেখে। দুপোরে দেখে রাইতে দেখে। দেখে আর ডরে চিক্কুর দিয়া ওঠে তারা। যখন তখন সেই আঁতকা আঁতকা ওঠা চিক্কুরে চিক্কুরে দেওভোগ গেরাম ফাঁইড়া ফাঁইড়া যাইতে থাকে।
তবে আচানকের কথা এই যে, সেই সাদা কপড়ের মাতারি খালি আইসা হাজির হয় গেরামের বৌ-ঝি-মায়েগো সামনে। সেয় কোনো পুরুষ পোলার নজরের সামনে আহে না। গেরামের একটা কোনো বেটায় যুদি তারে দেখে! কেউই দেখে না।
‘এমনে এমনে তো জিনিসটা যাইতে দেওন যায় না!’ ইমাম হুজুরে দশজোনরে একলগে কইরা কয়। ‘অইতে পারে অন্তরের ভিতরের ডরে হেরা কী দেখতে কী দেখতাছে! কিন্তুক গেরামের মা-ঝিয়েরা যা কইতাছে তারে উড়াইয়া দেওন যায় না! একটা কিছু তো করন লাগে এইবার!’
‘আর কী করনের আছে!’ দিশাবিশা হারানো সগল জনের মুখে এই একই কথা লড়েচড়ে। তারা তো যেমনে পারে তেমনে বৌ-ঝিয়েগো আগলানি দিয়া রাখতাছে! পারতে ঘরের কমবয়সী বৌ-বেটিগো একলা কোনোদিগে যাইতে দিতাছে না। তাগো লগে মুরুব্বি মা-চাচিরা থাকতাছেই। খোলা চুলে তাগো বাইরে চলাফিরা করন নিষেধ হইছে কোনো আগেই। সন্ধ্যার আগে আগে বাইরের কাম শেষ কইরা ঘরের ভিতরে যাইতাছে একেক জোনে নিয়ম মতোই।
কিন্তু তাতেও কী রেহাই আছে! দুপোর-মাদান কিচ্ছু মানতাছে না এই অশৈলী কারবারে! খরবরা দিনের আলোয় হেরা দেখা দেয় নাকি? যুগ-জনম ভইরা লোকে শুনছে যে, দিনে হেরা দেখা দেয় না। কিন্তু দেওভোগ গেরামে তো অখন সেই কথা তো দেহা যায় মিছা হইয়া যাইতাছে!
বৌ-ঝিয়েরা দিনে-দোপোরে লড়াচড়ি না করলে ঘর-সংসার চলে কী প্রকারে! ঘরের বেটারা কতখোন বইয়া বাড়ি পাহারা দিব! লোকে যার যার কর্মে যাওন বন কইরা বাড়িত বইয়া থাকলে, পেটের ভাত আইব কোনখান তেনে! এমনে চললে জিন্দিগি অচল হইতে কতখোন! অখন তো দেখা যায় বাঁচোনের আর রাস্তা নাই!
‘আছে!’ হুজুরে রাস্তা বাতায়; ‘গেরামরে বন্ধ করা গেলেই, বানবাতাসের আওন-যাওনের রাস্তাখানও সুন্দর বন্ধ হইয়া যাইব।’
গেরামরে বন্ধ করনের উপায়টা কী! উপায় হইল দোয়া-দুরুদ পড়তে পড়তে, উঁচা গলায় জিকির করতে করতে গেরামখানরে ঘুরানি দেও। নিয়ম ধইরা চক্কর দেওয়া গেলেই গেরামে বানবাতাসের আনা-যানার পথ বন্ধ হইয়া যায়। সেই একই নিয়ম পালন কইরা বন্ধ করন লাগব দেওভোগ গেরামরেও। তখন বানবাতাস কী অন্য কিছুরই আর গেরামে ঢোকোনের শক্তি থাকব না। গেরামে ছায়াখান ফালানেরও খ্যামতা থাকব না কোনো বালা মুসিবতের।
পরথমে এই কর্মখান করতে হইব টানা ৪০ দিন।
সেই ঘুরানিও খালি একবার দুইবার দেওয়ার উপায় নাই! ঘুরানি দেওন লাগে ২১ বার। এমনই নিয়ম। আরো নিয়ম এই যে, গেরাম বন্ধের এই কর্মরে দিনের যেকোনো সময়ে করন যায় না। এই কর্ম সাধন করার খোন আছে একটাই। রাইত। এই কর্ম শুরুই করতে হয় এশার ওক্তের পর। তারবাদে যতখোন লাগে।
এই ৪০ দিন ইমাম হুজুরে থাকব সগলতের আগে খাড়া, যাইব সগলতের আগে আগে। দোয়া-পানা যা করনের করব সেয়ই। আর অন্যরা খালি জিকিরের সোম হুজুরের লগে লগে জিকির ধরব।
যাইব কে কে? যত বেশি লোক হয়, ততই ভালা!
গেরামের জুয়ান পোলাগো সবটিয়ে কয়, গেরামের মুরুব্বি বাপ-চাচাগো কেউর এই কর্মে থাকনের দরকার নাই। যা করার করব এই পোলাপাইনেরাই। মুরুব্বিরা সগলতে বাড়িতে থাইক্কা পোলাপাইনগো খালি দোয়া করলেই চলব।
ইমাম হুজুরে যেইনে তাগো লগে আছে, তাইলে আর তাগো কিয়ের ডর! তারা কিছুরেই ডরায় না! হুজুরে সাব্যস্ত করে যে, গেরাম বন্ধ করনের কামখান শুরু করতে হইব আউজকা সন্ধ্যার তেনেই। আর দেরি করলে শেষে কিয়ের তেনে কী গরদিশ নামব কে কইতে পারে!
গেরামের পোলাটি সেই দিন যে যেমনে পারে তরাতরি রাইতের খাওন সারে। সাইরা যে পারে সে একখান কইরা হারিকেন বাত্তি জোগাড় করে। যে বাত্তি জোগাড় করতে না পারে, সে একখান লাঠি হাতে নেয়। নিয়া এশার ওক্তের পরে তারা মসজিদে আসে। আইসা দেখে একখান অচিন্ত্য বিষয় ঘটছে।
তাগো লগে যাওনের লেইগা আইসা হাজির ইসুফ মিয়ায়!
ইসুফ মিয়ার শইল না অখনো কাহিল! তারে তো কেউই কোনো সংবাদ দেয় নাই! সেয়ই কি না দেখ আইয়া খাড়াইয়া রইছে সেই কোন মাগরিবের ওক্তের তেনে। গেরাম বন্ধের এতবড় কর্মে সেয় শামিল না হয় কোন পরানে !
একবার ইমাম হুজুরের মনে হয় যে, তার উচিত- কইয়া বুঝাইয়া ইসুফ মিয়ারে বাড়িতে ফিরতি পাঠাইয়া দেওন। খালি অসুইক্ষাই তো না ইসুফ মিয়ায়, তার অন্তরেও তো টনটনা বেদনা! এই সব নিয়া সেয় আর ক্যান যাইব কষ্ট করতে!
কিন্তু লগে লগে হুজুরের এওও মোনে আসে যে, না! অর যাওনের কাম নাই! থাকুক ইসুফ মিয়ায় এই কামে। এমনে এমনে যদি কোনোপ্রকারে ছেড়াটায় নিজ অন্তরের দুক্ষু মোছতে পারে, তো মুছুক!
৪০টা দিন ধইরা এই যে এত্ত কষ্ট করে পোলাটিয়ে, তা দেখ বিনালে যায় না। কিছুমাত্র বিফল হয় না তাগো কর্মখান। সুন্দর সুফল পাওয়া যায় । ৪০ দিন পরে গেরামের মা-বৌ-ঝিগো কোনো একটা জোনে আর কিচ্ছু দেখতে পায় না। বানবাতাসের ছেমাও আর কেউর নজরে আসে না।
ইমাম হুজুরে কয়, ‘সুফল যে দিছে খোদায়, এই কারনে তার দরবারে হাজার শুক্কুর! কিন্তুক এইটা করলাম হইলো গা পরথম দফার কর্ম। এর বাদে, অখন করতে হইব পরের দফার কাম।’ পরের দফা তেমুন গেঞ্জামের কিছু না। এই, হাপ্তায় দুই দিন– শনি আর মঙ্গলবার কইরা গেরামখানরে বন্ধ করনের কর্মখান কইরা যাইতে হইব। সেই কামটা আবার একদিন দুই দিনের বেপার না। বহুত দিনের বেপার।
কত দিন?
এই পুরা বছরটার বেপার এইটা!
৪০ দিন গেরামরে ঘুরানি দেওয়া সগল পোলাপানের চক্ষের সামনে আঁতকা য্যান খুয়া-ওশের ওড়া-ভাসা শুরু হইয়া যায়। খুয়া নামতে থাকে। নাইম্মা, তাগো সকল দিক য্যান ঝাপসা বানাইয়া দেয়! হুজুরে আবার এইটা কী কয়! ৪০ দিন ২১ বার কইরা করনের ঠেকা আছিল, করছে। কিন্তুক তামানটা বছর এই কর্ম কেমনে করব!
পুরা বছর কর্মটা করনের কথাখান শুইন্নাই ত্তো তাগো মাথা তালা-গাড়া দিতাছে! সেই কাম করতে গেলে না জানি কী দশা হইবো তাগো! করতে গেলে দেহা যাইব যে, হেরা সবটি আপনা-আপনিই নাই হইয়া গেছে গা ! ৪০ দিন তো গেছে। আর করনের কাম কী! এই সব চিন্তায় সগলতে এত বেতালা থাকে যে, হুজুরের কথার উত্তর দেওয়ার খেয়ালও তাগো আসে না। কোনো জোনের মুখের তেনেই কোনো কথা বাহির হয় না।
‘আইচ্ছা তাইলে, শনি মঙ্গলবারের অই কামটারে আমি একলাই কইরা নিমু নে বচ্ছর ধইরা!’ এই প্রকারে হুজুরে সগলতেরে শরমের তেনে বাঁচায়।
‘না, হুজুর! আপনের লগে আমিও থাকমু!’ বহুত কাহিল গলায় কোনো রকমে কে এই কথাখান কয়! কয় ইসুফ মিয়ায়।
(চলবে)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ২৭)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন(কিস্তি ২৬)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ২৫)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ২৪)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন(কিস্তি ২৩)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন(কিস্তি ২২)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ২১)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ২০)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৯)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৮)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৭)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৬)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৫)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৪)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৩)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১২)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১১)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১০)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৯)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৮)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (সপ্তম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (ষষ্ঠ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (পঞ্চম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (চতুর্থ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (তৃতীয় কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (দ্বিতীয় কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (প্রথম কিস্তি)