দীপনের আলোতে প্রাণময়
আজ থেকে এক বছর আগে, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর ঘাতকের নৃশংস হামলায় মৃত্যুবরণ করেন জাগৃতি প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপন। আজ সোমবার তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশেষ স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, টিএসসি মিলনায়তনে।
বিকেল সাড়ে ৩টায় অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় সেখানে বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপত্তা অবস্থার সমালোচনা ছাড়াও দীপনকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন। একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
দীপনের মৃত্যুর পেছনে তিনি বাংলাদেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে এক আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।’
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, দীপনের ছোট বয়সের ছবি তাঁর মনের মধ্যে এখনো উজ্জ্বল হয়ে গেঁথে আছে। বড় হয়ে দীপন বাবার আদর্শেই অনুপ্রাণিত হয়ে সৃজনশীল কাজে যুক্ত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন আবু সায়ীদ। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ের চেয়েও দীপন বয়সে দশ মাসের ছোট। তারপরও তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুর নূর তুষারের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক অজয় রায়, অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা প্রমুখ। বক্তৃতার এক ফাঁকে নবারুণ ভট্টাচার্যের ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন মাহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান জলি, পরিবারের অন্য সদস্য ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। দীপন স্মৃতি সংসদ আয়োজিত ‘দীপনের আলোতে প্রাণময়’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে দীপনকে নিয়ে গুণীজনদের লেখা সম্বলিত একটি স্মারকগ্রন্থের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।
গত বছর ৩১ অক্টোবর যেদিন শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের কর্মস্থলে দীপন হামলার শিকার হন ও নিহত হন, সেই একই দিন আরেক প্রকাশক, শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলের ওপরও হামলা হয়। সে সময় তিনি আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।