অনানুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে ডিবি
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার তদন্তের ভার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) না দেওয়া হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবেই তাঁরা কাজ শুরু করেছেন বলে জানান উপকমিশনার।
২০০৪ সালে প্রায় একই স্থানে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর একই কায়দায় হামলা হয়েছিল, এবারও সে ধরনের কোনো আলামত পাওয়া গেছে কি না—সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলে কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘প্রতিটি তদন্ত যখন আমরা শুরু করি, ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় একই ধরনের ঘটনা অতীতে ঘটেছে কি না, সেগুলো বিবেচনায় আনা হয়। এটা তদন্তের অংশ হিসেবেই। ড. হুমায়ুন আজাদ যেভাবে আহত হয়েছিলেন বইমেলার একটি ঘটনায়। পরবর্তী সময়ে এই জাতীয় ঘটনা আরো বিক্ষিপ্তভাবে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘটেছে। সেগুলো আমরা বিবেচনা করছি। এবং সেগুলোর সাথে এগুলো মিলে যায় কি না, সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।’
এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বিভিন্ন ক্লু খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ডিবির উপকমিশনার। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম টুইটারে এ হামলার দায় স্বীকার করার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণপদ জানান, এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানেন না তিনি। তবে তদন্ত করার সময় এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। কেউ যদি স্বীকার করে থাকে, তবে এটার সত্যতা কতটুকু তা যাচাই করে দেখা হবে।
বইমেলাকে কেন্দ্র করে যে উচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে, তার ভেতরে কীভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটল—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে, সেটাই বাস্তবতা। কারো ব্যর্থতা আছে কি না, ঘটনা প্রতিহত করা যেত কি না, প্রতিরোধ করা যেত কি না, সেগুলো একটা দিক আছে। সেগুলো অবশ্যই কর্তৃপক্ষ দেখবেন। আমরা যে কাজটা এখন করছি, ঘটনাটার রহস্য উদ্ঘাটন করা।’
মতাদর্শ সম্পর্কিত মতপার্থক্যের কারণে যারা ক্ষিপ্ত-ক্ষুব্ধ বা তাদের মতের পছন্দের লোক নয়, তারা এ কাজটি করেছে কি না সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে জানিয়ে উপকমিশনার বলেন, আশা করা হচ্ছে, তদন্ত শেষে এর ফলাফল জানানো সম্ভব হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত কুপিয়ে হত্যা করে অভিজিৎ রায়কে। তিনি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের ছেলে।
ওই ঘটনায় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকেও জখম করে দুর্বৃত্তরা। রাফিদা আহমেদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় মামলা করেছেন অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।