মরণেও হয়নি বিচ্ছেদ, স্মরণে লাভ পয়েন্ট
রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী পর্যটক আলাউদ্দিন পাটোয়ারী ও তাঁর নববধূ আইরিন সুলতানা লিমা। এ ঘটনার পরের দুই দিন পুরো কাপ্তাই লেক চষে ফেলেছিল ডুবুরি আর উদ্ধারকারী দল। তৃতীয় দিন সকালে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় লেকে ভেসে ওঠে দুজনের মৃতদেহ। মরণও যেন পারেনি দুজনকে আলাদা করতে।
ঘটনাটি ছিল ২০১৪ সালের মার্চ মাসের। সেই আলাউদ্দিন-লিমা দম্পতিসহ পৃথিবীর সব ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাঙামাটির পলওয়েল ন্যাচার পার্কে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম লাভ পয়েন্ট। ডিসি বাংলোসংলগ্ন এই পার্কের পাশের হৃদেই ওই বছরের ২২ মার্চ তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
আজ শনিবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে নির্মিতব্য এই স্থাপনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।
এ সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শামসুজ্জামান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ, রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক ফজলে এলাহীর প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনায় নির্মিতব্য এই ‘লাভ পয়েন্ট’টি হবে দেশের প্রথম এই ধরনের কোনো স্থাপনা। যেখানে ভালোবাসার স্মারক হিসেবে একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা থাকবে এবং এখানে বেড়াতে আসা প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীরা নিজেদের পারস্পরিক বন্ধনের চিহ্ন হিসেবে একটি স্ট্যান্ডে তালা ঝুলিয়ে চাবিটি কাপ্তাই হ্রদে ছুড়ে ফেলবেন।
পার্বত্য সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ধরনের ভালোবাসার স্মারক থাকলেও বাংলাদেশে এটাই প্রথম। এর মাধ্যমে নিহত দম্পতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পাশাপাশি পৃথিবীর সব ভালোবাসাকেও আমরা স্মরণ করতে চাই। একই সঙ্গে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যেন এই স্থানটি দেখতে আসেন ও উপভোগ করেন, সেই জন্য এই স্থানটিকে ঘিরে কিছু বড় পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করতে চাই আমরা।’