স্বাবলম্বী না হলে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে না : বিচারপতি জিনাত আরা
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জিনাত আরা বলেছেন, স্বাবলম্বী না হলে নারীর প্রতি সহিংসতা কমবে না। আর্থিকভাবে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে। মেয়েদের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী করতে অভিভাবকসহ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
আজ শনিবার নগরীর হোটেল সিটি ইন-এ ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্র বিনির্মাণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন জিনাত আরা।
ইউকেএআইডির সহায়তায় বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, অ্যাডোর এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
বিচারপতি জিনাত আরা বলেন, পুলিশ বিভাগ এবং বিচারকদের জনগণের আস্থা অর্জনে আরো তৎপর হতে হবে। মিথ্যা মামলা যাতে না হয়, সেদিকে পুলিশ বিভাগ ও আইনজীবীদের সতর্ক থাকতে হবে।
পাশাপাশি একজন প্রকৃত ভিকটিম মামলা নিয়ে থানায় এলে অযথা হয়রানি না করে তাকে সর্বপ্রকার সহায়তা করতে হবে।
বিচারকদের উদ্দেশে জিনাত আরা বলেন, প্রতিটি মামলার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার করে সাজা প্রদান করতে হবে। বাদী ও বিবাদী সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণে আরো আন্তরিক হতে হবে। সাক্ষী উপস্থিত থাকলে প্রয়োজনে অফিস সময়ের পরেও সাক্ষ্যগ্রহণ করতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন খুলনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেসমিন আনোয়ার, মহানগর দায়রা জজ অরূপ কুমার গোস্বামী, বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবদুর রব হাওলাদার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল ইসলাম।
সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাডোর খুলনার নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার প্রকল্প পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর বনশ্রী মিত্র নিয়োগী। সভায় বিচারক, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, মানবাধিকারকর্মী, এনজিও এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারী বক্তারা পারিবারিক আদালতকে আরো শক্তিশালী, অপরাধের প্রকৃত কারণ চিহ্নিত, দ্রুততার সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাসমূহ নিষ্পত্তি, অন্য মামলার মতো নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাও সরাসরি আমলযোগ্য করার বিধান প্রবর্তনের দাবি জানান। তারা একাধিক ট্রাইব্যুনাল গঠন, আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে অন্য কোর্টে মামলা স্থানান্তর এবং প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ডিএনএ টেস্টের ব্যবস্থা করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।