শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে বলেছেন জাফর ইকবাল
জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ না ঘটিয়ে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে হামলার শিকার হন এই শিক্ষক। এরপর তাঁকে নেওয়া হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে রাতেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হয়।
এ সময় জাফর ইকবালের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী শিক্ষক ইয়াসমিন হক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ। পরে রাতে তাঁরা জাফর ইকবালের সার্বিক শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি বার্তা দেন। সেখানে ইয়াসমিন হক ও উপাচার্য জাফর ইকবালের বরাত দিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। দ্রুতই সুস্থ হয়ে জাফর ইকবাল আবার ক্যাম্পাসে ফিরে যাবেন বলেও জানান তাঁরা।
ফেসবুক বার্তায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইয়াসমিন হক ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আমাদের সব ছাত্রকে বলছি যে জাফর ইকবাল আমাকে নিজে বলেছে, তাঁকে আনা হয়েছে সিএমএইচে, সে একদম ভালো আছে, সুস্থ আছে। সে বলেছে, সব ছাত্রছাত্রীকে জানাতে, তোমরা প্লিজ উত্তেজিত হয়ো না। আর চিন্তার কোনো বিষয় নেই। ওকে জাস্ট এখানে রাখা হয়েছে অবজারভেশনের জন্য। তোমরা সব দোয়া করো। আর ইনশাআল্লাহ, খুব তাড়াতাড়ি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবেন।’
‘তিনি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবেন। তাঁর একটাই ইচ্ছা, ক্যাম্পাসে কেউ যেন কিছু না করেন। পরে কোনো কারণ হবে যে বলবে, দেখ ছাত্ররা তো এগুলো করেছে,’ যোগ করেন ইয়াসমিন।
এ সময় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘উনি এখন অনেক ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। সবাই দোয়া করবেন, উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কেউ যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে, সবাইকে অনুরোধ করেছেন। আমরা সবাই আশা করি, উনাকে যারা ভালোবাসি, উনার কথাটা শুনব। উনার কথাটা শুনে উনার জন্য দোয়া করব।’
‘ইনশাআল্লাহ, উনি অল্প সময়ের মধ্যে ভালো হয়ে আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন। দেশবাসী যেন জাফর ইকবালের জন্য দোয়া করেন, আমরা সেই আহ্বান জানাই,’ যোগ করেন উপাচার্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের একটি উৎসব ছিল। সেই উৎসবে অংশ নিয়ে অন্যদের সঙ্গে মুক্তমঞ্চে বসে ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এক যুবক হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর মাথায় ছুরিকাঘাত করেন।
হামলাকারীর নাম ফয়জুর রহমান (২৪)। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশে কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ায় থাকেন ফয়জুর। তিনি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন। ফয়জুর মঈন কম্পিউটার নামে একটি দোকানে কাজ করেন।