২৫ লাখ করে দেওয়ার আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার
ময়মনসিংহে গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চার শিক্ষার্থীর পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান ওই ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ নিহত পরিবারের সদস্যদের একটি করে চাকরির আশ্বাস দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আজ শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে হোস্টেলে ফেরত যান। এরপর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনসহ নয় সিন্ডিকেট সদস্য।
এর আগে সকালে সিন্ডিকেট সভায় নিহত চার শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ১২টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে সব সিন্ডিকেট সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন।
রাত ৮টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে আসেন সংসদ সদস্য বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান। তিনি প্রথমে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে এবং পরে সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আশ্বাস দেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামী ৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ক্যাম্পাসে এলে সেদিনই ১০ লাখ টাকা এবং পরে আরো ১৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে চার শিক্ষার্থীর পরিবারকে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্র মো. আরাফাত হোসেন জানান, নিহত চার শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছিল। যে কারণে তাদের এই আন্দোলন। তিনি দাবি করেন, গতকাল কুয়েটের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. সোবাহান মিয়া ছাত্রদের কাছে লিখিত দিয়েছিলেন যে ওই চার শিক্ষার্থীদের পরিবারকে কোটি টাকা করে দেওয়া হবে। অথচ আজ তারা সিন্ডিকেট সভায় ভিন্ন কথা বলছেন।
আগামী ৪ এপ্রিল কুয়েটের তৃতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আসার কথা রয়েছে, যার প্রস্তুতিও চলছে।
আজ সকালে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনে জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে। সেখানে নিহত চার শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছিল সিন্ডিকেট।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোজ কুমার জানান, ভালুকায় গ্যাস বিস্ফোরণে চার শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আজ সকালে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা আহ্বান করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। এই সভায় নিহত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়াসহ ১০ দফা সিদ্ধান্ত হয়।
এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে-চার শিক্ষার্থীর মৃত্যু দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করে সিন্ডিকেট এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করবে, এই ঘটনার জন্য দায়ী বাড়িটির মালিক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা, চার শিক্ষার্থীর পরিবার চাইলে প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতির কাছে পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠানো, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো ইত্যাদি।
এই সিদ্ধান্ত জানার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন এবং পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে এক কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার দাবি জানান। সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন।