যে কারণে ‘নবাব’ ও ‘বস-২’-এর পক্ষে প্রদর্শক সমিতি
আসন্ন ঈদে দুটি যৌথ প্রযোজনার ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। একটি শাকিব খান অভিনীত ‘নবাব’, অন্যটি জিৎ অভিনীত ‘বস-২’। এ দুটি ছবিসহ যৌথ প্রযোজনার সব ছবিতে অনিয়ম বন্ধের দাবিতে এফডিসিভিত্তিক ১৪টি সংগঠনের ‘চলচ্চিত্র পরিবার’ গত রোববার সেন্সর বোর্ড ঘেরাও করে। যৌথ প্রযোজনার ছবিতে ‘প্রতারণা’ হচ্ছে অভিযোগ করে যেদিন ‘চলচ্চিত্র পরিবার’ রাজপথে নেমেছে, সেদিনই সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। তারা জানায়, ঈদে ‘নবাব’ ও ‘বস-২’ মুক্তি না পেলে আর কোনো ছবিই হলে মুক্তি দেওয়া হবে না।
‘নবাব’ ছাড়াও আসন্ন ঈদে শাকিব খানের ‘রাজনীতি’ ও ‘রংবাজ’ এ দুটি ছবি মুক্তি পাবে; কিন্তু এ দুটি ছবিও প্রদর্শক সমিতি হলে দেখাতে রাজি নয়, যদি যৌথ প্রযোজনার ওই দুটি ছবি ছাড়পত্র না পায়। সমিতি কেন এমন অবস্থান নিয়েছে, তা নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার আহমেদ নওশাদ।
নওশাদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যে ছবি মুক্তি পায়, তার বেশির ভাগই দর্শক দেখে না। কোনোভাবেই আমরা সিনেমা হলের খরচ তুলতে পারছি না। একমাত্র রোজার ঈদে আমাদের দর্শক ছবি দেখেন, তাও যদি তেমন ছবি হয়। আবার কোরবানির ঈদে দর্শক তেমন ছবি দেখেন না। এখন যদি আমরা এই রোজার ঈদে ভালো ব্যবসা করতে না পারি, তাহলে সিনেমা হল এমনিতেই বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ, এই এক ঈদের টাকা দিয়ে সারা বছর সিনেমা হল চলে।’
শাকিব খানের আরো দুটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে, সেগুলো কেন আপনারা চালাতে চাইছেন না—জানতে চাইলে নওশাদ বলেন, ‘আমরা কেন এ দুটি ছবি চালাতে চাই না? তার দুটি কারণ আছে, প্রথম কারণ, আমরা এর আগে শাকিব খানের অনেক ছবি দেখেছি, কিন্তু গত রোজার ঈদে ‘শিকারী’ ছবি দেখার পর আমাদের মনে হয়েছে নতুন শাকিবকে দেখছি। যাঁরা শাকিব খানের সমালোচনা করতেন, তাঁরাই শাকিব খানের প্রশংসা করেছেন। এখন বিষয় তো শাকিব খান নয়, বিষয় শাকিব খানকে উপস্থাপন করা। এরই মধ্যে নতুন ছবির ট্রেইলার প্রকাশ পেয়েছে, আপনারা দেখেন কোন ছবিটি দেখতে ইচ্ছা করে। আমরা হল মালিকরাও চাই ভালো ছবিটি হলে চালাতে, যেন দর্শক খুশি হয়ে ছবিটি দেখে।’
“আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে আমরা ‘নবাব’ ছবির জন্য এরই মধ্যে ১২০টি সিনেমা হলে জাজ মাল্টিমিডিয়াকে বুকিং মানি দিয়েছি। আর ‘বস-২’-এর জন্য ১০০ সিনেমা হল। এখন যদি ছবি দুটি মুক্তি না পায়, তা হলে জাজ তো আমাদের টাকা ফেরত দেবে না। পরে যখন ছবি মুক্তি পাবে, তখন ছবি দিয়ে দেবে। আর ছবির শুটিংয়ের সময় বুকিং মানি দেওয়াটা নতুন কিছু নয়। আমরা যখন দেখি ভালো একটি ছবি নির্মাণ হচ্ছে, তখন আমরা বুকিং করে রাখি। এমন চলছে আরো ত্রিশ বছর আগে থেকে।”
চলমান আন্দোলনে চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, যৌথ প্রযোজনার ছবির নামে আসলে ভারতীয় ছবিকেই বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হচ্ছে। নিয়মনীতি না মানলে এসব ছবি হলে দেখানো যাবে না বলেই গত রোববার রাজপথের বক্তৃতায় বলেন শিল্পী, নির্মাতা ও প্রযোজকরা।
‘বস-২’ ছবিতে অনিয়ম দেখার পর যৌথ প্রযোজনাবিষয়ক প্রিভিউ কমিটি আপত্তিপত্র দিলেও পরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘পুনর্বিবেচনা’ করে দেখার অনুরোধে ছবিটি সম্পর্কে ‘অনাপত্তি’ জানায় কমিটি। এখন সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র দিলেই ছবিটি হলে প্রদর্শনে কোনো বাধা থাকবে না। তবে চলচ্চিত্র পরিবারের প্রশ্ন, অনিয়ম থাকা সত্ত্বেও কী করে একটি ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়?