শেষ হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৮
ষোড়শ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামল গতকাল শনিবার। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ প্রতিপাদ্যে এ উৎসবের আয়োজন করে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। নয় দিনের এ উৎসবে বাংলাদেশসহ ৬৪ দেশের ২১৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
বিকেল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠান। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।
'ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৮' উৎসবে এশিয়ান কম্পিটিশন বিভাগ, রেস্ট্রোস্পেক্টিভ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, বেস্ট চিলড্রেনস ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, উইমেন ফিল্মমেকার সেকশনসহ শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্টে মোট আটটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। শিশু চলচ্চিত্র বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ইরানের চলচ্চিত্র ‘হোয়াইট ব্রিজ’ এবং দর্শক বিবেচনায় সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ভারতের চলচ্চিত্র ‘টোপি’।
নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে রাশিয়ার ‘সোফিস্কা’, স্বল্পদৈর্ঘ্যে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে নরওয়ে ও যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘থ্যাঙ্ক ইউ ফর দ্য রেইন’।
সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আফগানিস্তানের ‘পারলিকা’, কাহিনীচিত্রে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ফ্রান্সের ‘লেস বিগোরনিয়াক্স’, শ্রেষ্ঠ কাহিনীচিত্র চেক প্রজাতন্ত্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘আনা’।
শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম বিভাগে কাহিনীচিত্রে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের ‘পুনঃপৌনিক’, শ্রেষ্ঠ কাহিনীচিত্র হয়েছে ইরাকের ‘দ্য ভায়োলেট’, প্রামাণ্যচিত্রে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে নেপালের ‘এ সং ফর বারপাক’ ও শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্র হয়েছে যুক্তরাজ্যের ‘কন্টিনেন্টাল ড্রিফট’।
বাংলাদেশ প্যানোরোমা বিভাগে চলচ্চিত্রবিষয়ক সংগঠন ফিপরেসকির সৌজন্যে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে লতা আহমেদের ‘সোহাগীর গয়না’ ও তৌকীর আহমেদ ‘হালদা’ চলচ্চিত্রের জন্য হয়েছেন শ্রেষ্ঠ নির্মাতা।
অস্ট্রেলিয়া-এশিয়া কম্পিটিশন বিভাগে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে তুরস্কের ‘জার’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হয়েছেন তুরস্কের অনুর সায়লাক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন ফিলিপাইনের অ্যানের ডিজোন, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন ইরানের পারিনাস ইজাডায়ার ও মিনা সাদাতি, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হয়েছেন ইরানের মাসুদ সালামি ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হয়েছেন তুরস্কের অনুর সায়লাক, ডগু ইয়াসার আকাল ও হাকান গান্ডে।
স্পিরিচুয়াল ফিল্মস বিভাগে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হয়েছে রাশিয়ার ‘আমুন’, পূর্ণদৈর্ঘ্যে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে তাজিকিস্তানের ‘ব্রেক থ্রু’, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্র অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার যৌথ প্রযোজনার ‘এখ : বিয়োন্ড দ্য সুনামি’ এবং সেরা কাহিনীচিত্র ইরানের ‘স্টিল ইয়েট’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামানসহ অনেকে।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমরা নিজেদের সভ্য বলে দাবি করছি। আসলে কি আমরা সভ্য? প্রত্যেকটা চলচ্চিত্রের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। একটি চলচ্চিত্র বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে কাছে টানতে পারে, ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। চলচ্চিত্র আমাদের সভ্যতায় বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। চলচ্চিত্র পারে বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে।’
এ উৎসবে আসা চলচ্চিত্রপ্রেমী হাবিব অনিক বলেন, ‘এ ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং দর্শক সবাইকে উৎসাহিত করে। অনেক দেশের চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানা যায়।’