মিতা হকসহ রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা পেলেন তিনজন
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কেন্দ্র করে সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র ও মননধর্মী সংগঠন ‘খামখেয়ালী সভা’- এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের তিন রবীন্দ্রগুণীকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন অধ্যাপক ড. করুণাময় গোস্বামী, অধ্যাপক মঞ্জুলা বসু (ভারত) এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী মিতা হক।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে খামখেয়ালী সভার চতুর্থ বর্ষপূর্তীতে এ সম্মাননা দেওয়া হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশেষ অতিথি ছিলেন রবীন্দ্রগুণী ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক। অনুষ্ঠানে বক্তরা রবীন্দ্রচিন্তার প্রচার ও প্রসারের বিষয়ে কথা বলেন।
আহমদ রফিক বলেন, ‘রবীন্দ্রচর্চার শুরুটা বড় বাধার মধ্য দিয়ে গেছে। পাকিস্তান আমলে সেটি ছিল। আর পরবর্তী সময়ে একাডেমিক চর্চার বাইরে সামাজিক রাবীন্দ্রিক মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত করার কাজ খুব অগ্রসর হয়নি। বাংলাদেশে রবীন্দ্রসঙ্গীতের বড় প্রতিষ্ঠান হয়েছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত হলে হল উপচে পড়ে। তবে রবীন্দ্র সাহিত্যচর্চার কাজ খুব বেশি হয়নি’।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর তাঁর কণ্ঠের সমস্যার কারণে কথা বলতে না পারায় তাঁর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন ‘খামখেয়ালী সভা’র সভাপতি মাহমুদ হাসিম। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের সেনাপতি। সকল যুদ্ধে তিনি সেনাপতি। আর তাদের প্রতি সম্মাননা জানাই যাদের এখানে সম্মানিত করা হলো’।
টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মঞ্জুলা বসু বলেন, ‘আজ এই সভায় এসে যে সম্মান ও স্বীকৃতি পেলাম সেটি একটি বিশেষ ঘটনা। ভারত বর্ষের বাইরে অন্য একটি দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে এমন সম্মাননা পাবো আশা করিনি’।
অধ্যাপক মঞ্জুলা বসু আরো বলেন, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় টেগোর রিসার্চ কেন্দ্র। আগাগোড়া চেষ্টা করেছি কীভাবে এই প্রতিষ্ঠানকে আরো এগিয়ে নেওয়া যায় এবং রবীন্দ্রচর্চাকে আরো ছড়িয়ে দেয়া যায় এই বিষয়ে।
সম্মাননা প্রাপ্তি নিয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী মিতা হক বলেন, ‘খামখেয়ালীর খামখেয়ালটা ভালো লাগল। আমার মনের ভেতর কেমন আনন্দ হচ্ছে সেটি কি আর বলে প্রকাশ করা যাবে’। খামখেয়ালী সভার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওদের সমগ্র কাজকর্ম, চর্চা প্রসার সবকিছু বেশ ভালোভাবে হয়। তাদের কাছ থেকে এটি বেশ বড় স্বীকৃতি। আমি খুব কম কাজ করছি ইদানিং। নড়েচড়ে করতে হবে। পারলে আরো জোরেসোরে কাজ করতে হবে’।
সভাপতি বক্তব্যে মাহমুদ হাসিম বলেন, ড. অধ্যাপক করুণাময় গোস্বামী আমাদের মাঝে আর না থাকলেও তাঁকে মরণোত্তর সম্মাননা আমরা জানাইনি। কারণ, তিনি বেঁচে থাকতেই আমরা এই সম্মাননা জানানোর কথা ভেবেছিলাম।
সরকারের কাছে খামখেয়ালী সভার পক্ষ থেকে দাবি জানিয়ে মাহমুদ হাসিম বলেন, আমাদের একটি দাবি রয়েছে। আর সেটি কোনো অর্থ তহবিলের দাবি নয়। এটি হলো, স্কুল, কলেজে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে সাংস্কৃতিক শিক্ষা কোর্স করার দাবি। আমরা ডিজিটাল হবো। তবে এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক শিক্ষাও নিতে হবে।
সম্মাননা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম, অদিতি মহসিন, জাকির হোসেন তপন।