ফরীদি ভাই আমাকে দীলিপ কুমার বলে ডাকতেন : মিজু আহম্মেদ
মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। জনপ্রিয় এই অভিনেতা চলচ্চিত্রে বেশির ভাগ সময়ই খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের আরেক শক্তিমান খলনায়ক মিজু আহম্মেদ মনে করেন, হুমায়ুন ফরিদীর মতো করে মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রে এমন শক্ত অবস্থান খুব কম শিল্পীই ধরে রাখতে পেরেছিলেন।
হুমায়ুন ফরিদীর স্মৃতি স্মরণ করে অভিনেতা মিজু আহম্মেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “সারা বছরই নিজের কাজে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু কোনো বন্ধুর মৃত্যু বা জন্মদিনে তাঁর জন্য বুকের ভেতর কেমন যেন হু হু করে ওঠে। হুমায়ুন ফরীদি আমার অনেক কাছের বন্ধু , আমরা একসাথে অনেক কাজ করেছি। কাজের বাইরেও আমাদের অনেক আড্ডা হতো। আমাকে দেখলেই সে প্রশ্ন করত, ‘ভাই আপনি তো দেখতে দিলিপ কুমারের মতো। ভিলেনের চরিত্রে কাজ করেন কেন? আপনার মতো চেহারা থাকলে আমি নায়ক ছাড়া অভিনয়ই করতাম না।’ সে আসলে সবারই বন্ধু ছিল। সেটে যখন থাকত তখন প্রোডাকশন বয় থেকে ছবির প্রযোজক সবার সাথেই ভালো ব্যবহার করত। আর অভিনয়ের ব্যাপারে অনেক সিরিয়াস ছিল। কামেরার সামনে সেকেন্ডের মধ্যে নিজেকে বদলাতে পারত।”
নতুন শিল্পীদের জন্য হুমায়ুন ফরীদিকে একজন আদর্শ মনে করেন মিজু আহম্মেদ। নতুনদের প্রতি বললেন, ‘টেলিভিশন বা নাটক জগতের অনেক শিল্পীই কিন্তু চলচ্চিত্রে কাজ করতে এসেছেন। কিন্ত তেমন কোনো অবস্থান চলচ্চিত্রে তৈরি করতে পারেননি। এখনো অনেক নতুন ছেলেমেয়ে এখানে কাজ করতে এসেছে বা কাজ করছে। তাদের বলব, যদি সত্যি শিল্পী হতে চাও তাহলে ভালো শিল্পীর ভালো গুণগুলো গ্রহণ করো। আর গল্প অনুযায়ী সঠিক অভিনয়টা দেওয়ার চেষ্টা করো। কাজের সাথে প্রেম করো তাহলে কাজও তোমাদের সাথে প্রেম করবে।’
হুমায়ুন ফরীদি নেই আজ চার বছর। তাঁর অভাব কীভাবে বোধ করেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে মিজু আহম্মেদ বলেন, ‘আজ হুমায়ুন ফরীদির মৃত্যুবার্ষিকী। আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করেছিলাম বলে সকাল থেকেই অনেক গণমাধ্যমকর্মী ফোন দিচ্ছেন। আবার অনেক শিল্পী আছেন, যাঁদের মৃত্যুর দিন তাদের পরিবারও মনে রাখে না। হুমায়ুন ফরীদি অভিনয় দিয়ে নিজের এই অবস্থান তৈরি করেছেন।’
বর্তমান সময়ে ভালো শিল্পীর অভাব আছে বলেও মনে করেন মিজু আহমেদ। বললেন, ‘দেখুন হুমায়ুন ফরীদি মারা যাওয়ার পর এই ধরনের চরিত্র নিয়ে কাজ করাই পরিচালকরা বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ এমন কোনো শক্তিমান অভিনেতা নেই যার ওপর ভরসা করা যায়। ভালো শিল্পী ছাড়া ভালো চলচ্চিত্র কীভাবে হবে?’