ফিরে এলো নায়ক মান্না
পহেলা বৈশাখে বিএফডিসিতে আবারও ফিরলেন নায়ক মান্না। স্বশরীরে না হলেও নাম আকারে তিনি এদিন আবারে স্থান পেয়েছেন নামফলকে। এফডিসির ডিজিটাল কমপ্লেক্সের নামকরণ করা হয়েছে মান্নার নামে। ভবনটির নাম এখন আগের মতোই হয়েছে- ‘মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্স’। মাঝে অবশ্য মান্নার নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রনায়কের স্মৃতি ধরে রাখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়ে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এই বিষয়ে পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, “৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে ‘মান্না ডিজিটাল ভবন’ থেকে ‘মান্না’ নামটি বাদ দিয়ে ভবনটির উদ্বোধন করা হয়। আমরা সবাই এই কাজের প্রতিবাদ করেছিলাম। পহেলা বৈশাখের আগের দিন আবার নায়ক মান্নার নামফলক বসানো হয়েছে। আমরা খুব খুশি যে মান্না তাঁর স্থান ফিরে পেয়েছেন।”
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান বলেন, “জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে ‘মান্না ডিজিটাল ভবন’ থেকে ‘মান্না’ নামটি বাদ পড়ায় শুধু আমরা শিল্পীরাই না, পুরো এফডিসির লোকজন এর প্রতিবাদ করে। সাংবাদিক সমাজের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, যে তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি প্রকাশ করেছে। কারণ ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে যেদিন নায়ক মান্নার নাম বাদ যায়, সেদিন সাংবাদিকরাই এর প্রতিবাদে সংবাদ প্রচার করেছেন। তারপর ধন্যবাদ এফডিসি কর্তৃপক্ষকে তারা আবারও নায়ক মান্নার নাম আগের জায়গায় ফেরত দিয়েছে।”
মাঝের কিছু সময় নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির সহসভাপতি ওমর সানি। তিনি বলেন, ‘মান্না বারবার ফিরে আসেন না। নায়ক মান্না বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জন্য যা করেছেন, তা আমি কেন আমরা অনেকেই করতে পারিনি। তাঁর নামে একটি কমপ্লেক্স করা হয়েছে, এটা বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করার স্বীকৃতি। এর ফলে যাঁরা ভালো কাজ করছেন, তাঁরা আরো ভালো কাজ করার উৎসাহ পাবেন।’
নায়ক মান্নার স্ত্রী ও মান্না ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেলী মান্না বলেন, ‘নায়ক মান্না শুধু শিল্পী সমিতি নয়, তিনি প্রযোজক সমিতিরও সদস্য ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি সব সময় চলচ্চিত্রের কথাই ভাবতেন। কথায়, চলাফেরায় সবকিছুতেই ছিল চলচ্চিত্র। তাঁর মৃত্যুর পর আমি ও আমার সন্তানরা যে সম্মান পেয়েছি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের কাছে, আমাদের আর কোনো চাওয়া নেই।’
৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে ‘মান্না ডিজিটাল ভবন’ থেকে ‘মান্না’ নামটি বাদ দিয়ে নতুন করে উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। এ ঘটনায় এফডিসির শিল্পী, পরিচালক এবং তাঁর পরিবারের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। ঘটনাটির পেছনে উপযুক্ত কোনো কারণ দেখতে পারেনি কেউ। এভাবে এফডিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে মান্নার নাম মুছে দেওয়াকে তাঁর স্মৃতিকে চিরতরে হওয়ার শামিল বলে প্রতিবাদ করেছিলেন মান্নার সহযোদ্ধারা।
২০০৮ সালে তৎকালীন তথ্যসচিব জামিল ওসমান এবং এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আ ন ম বদরুল আমিন বেশ ঘটা করেই মান্না ডিজিটাল ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। দীর্ঘ সাত বছর পর মান্নার নামটি হঠাৎ করেই মুছে ফেলার পেছনে কারণ হিসেবে বলা হচ্ছিল, মান্নার নামটি এফডিসির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত ছিল না। এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম হারুন-অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেল, তিনিও এ বিষয়ে আগে কিছুই জানতেন না, সাংবাদিকদের কাছে থেকে তিনি বিষয়টি জেনে এর প্রতিকারের নির্দেশ দেন। রং করার জন্য নামফলক তোলা হয়েছিল এখন আবারও সেটি বসানো হয়েছে।