দাঁতের ক্ষয় যেভাবে হয়
দাঁতের রয়েছে তিনটি স্তর। বাইরে ঝকঝকে সাদা আবরণকে বলা হয় অ্যানামেল। অ্যানামেলের নিচে দাঁতের যে উপাদান রয়েছে, তার নাম ডেন্টিন। ডেন্টিনের ঠিক নিচের অংশের নাম হচ্ছে পাল্প। স্বাভাবিক অবস্থায় দাঁতের ওপর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অসংখ্য ছিদ্র রয়েছে। এসব ছিদ্রকে খালি চোখে দেখা যায় না।
আমরা যখন খাবার খাই, দাঁতের সেসব অদৃশ্য গর্তের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্যের কণা জমা হয়। দাঁত পরিষ্কার না করলে খাদ্যকণাগুলো দাঁতের গায়ে লেগে থাকে। এসব খাদ্যকণা ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত জমে থাকলে তাতে বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে এবং পচে যায়।
এসব জীবাণু এক প্রকার এসিড তৈরি করে। এই এসিডের নাম হচ্ছে ল্যাকটিক এসিড। ল্যাকটিক এসিড দাঁতের সেই অদৃশ্য গর্তগুলোর ক্ষয়সাধন করে। এই এসিড বেশি সময় ধরে কার্যকর থাকলে তা দাঁতের আরো বেশি ক্ষয়সাধন করতে থাকে। দাঁত ক্ষয় হতে হতেই তা থেকে গর্তের সৃষ্টি হয়ে বড় গর্তে পরিণত হয়।
প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গর্তটিকে অ্যানামেলের ওপর ছোট্ট কালো দাগের মতো দেখায়।
পরে সেখানে এভাবে আরো বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্ত অ্যানামেল পেরিয়ে ডেন্টিন পর্যন্ত পৌঁছায়। এরপর সেই গর্তে আরো খাদ্যবস্তু জমা হয়ে সেখানে আরো বেশি এসিড তৈরির সুযোগ পায়। একপর্যায়ে সেই গর্ত দাঁতের অন্তস্তল পাল্পকে আক্রান্ত করে এবং দাঁত ক্ষয় হয়ে মারাত্মক অবস্থা ধারণ করে। দাঁতের পাল্প কয়েক দিন আক্রান্ত থাকলে তা দাঁতকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়। আবার অদৃশ্য গর্ত ছাড়া আরো অনেক সময়েই খাদ্যকণা আটকে যায়। এসব খাদ্যকণা আগের মতো জীবাণু আক্রান্ত হয়ে পচে যায় এবং এসিড তৈরি করে। এই এসিড দাঁতের ক্ষয় করে এবং গর্তের সৃষ্টি করে। এভাবেই দাঁতের ক্ষয় হয়।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।