ক্যানসার চিকিৎসায় বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
ক্যানসার একটি ভয়াবহ রোগ। তবে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ক্যানসারের চিকিৎসায় বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়েছে।
ক্যানসারের চিকিৎসায় বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে কেমন, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৯০তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ক্যানসার চিকিৎসায় বাংলাদেশের অবস্থার কোথায়?
উত্তর : ক্যানসার চিকিৎসায় বাংলাদেশ আসলে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। সে সময়টা ১৯৯২/১৯৯৩ সাল, সেই সময় থেকে শুরু করে আজকের অবস্থানটুকুর অনেক পরিবর্তন। আমরা যদি প্রথমে জানি যে ক্যানসারে কী কী চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। যেমন ধরেন শল্য চিকিৎসা। শল্য চিকিৎসায় সব কিছু আগে জেনারেল সার্জনদের করতে হতো। এখন যেমন দেখি ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি এসেছে। প্লাস্টিক সার্জারি সাহায্যকারী হিসেবে এসেছে। এরপর বিভিন্ন অঙ্গের ভিন্ন ভিন্নভাবে সার্জন তৈরি হয়ে গেছে। এতে করে খুব ভালোভাবে শল্য চিকিৎসা করা যাচ্ছে। এরপর আমাদের দরকার হয় রেডিয়েশন থেরাপি। আমরা যেটি জানি, আগে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেন্টারগুলোতে দেখতাম টুডাইমেনশনাল থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা হতো। এখানে আমরা এখন মিনিএসেকেলেটর দিয়ে চিকিৎসা করছি। যদি সরকারি খাতে এটি একটি দুটো জায়গায় রয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। তবে অনেক সেন্টার এর মধ্যে তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে বড় সেন্টারগুলোর মধ্যে আধুনিক ক্যানসার সেন্টার তৈরি হয়েছে স্কয়ারে। ইউনাইটেড রয়েছে, অ্যাপোলো রয়েছে। নতুনের মধ্যে খাজা ইউনুস এসেছে। অনেক বড় বড় সেন্টার বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে। ডেল্টা এসেছে, আহসানিয়া মিশন এসেছে। সিলেটে নর্থ ইস্ট ক্যানসার হাসপাতাল এসেছে। এগুলোতে কিন্তু অনেক আধুনিক সুবিধা এসেছে। এখন টু ডায়মেনশনালগুলো থ্রি ডায়মেনশনাল হয়েছে। এতে এগুলো নির্দিষ্ট চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে। আগে যেটি দেখা যেত অনেক বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকত। এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু টিউমার যেটি রয়েছে, আমরা কেবল সেই জায়গাতেই সরাসরি আঘাত করতে পারছি এবং টিউমারটা সেখানে মারা যাচ্ছে। এটি হলো ইনটেনসেটিভ মডিউলুশন রেডিয়েশন থেরাপি। আরো রয়েছে ইমেজ গাইডেট রেডিয়েশন থেরাপি। আমরা ইমেজ থেকে ঠিক করছি, টিউমারটা কতটুকু হচ্ছে। প্রতিদিন আমরা একে পুনর্গঠন করতে পারছি। এটি করে আমরা ওই অনুযায়ী টিউমারকে ধ্বংস করতে পারছি। এটি কিন্তু আগে ছিল না। আমাদের আধুনিক চিকিৎসায় এসবিএটি এসেছে। সব সেন্টারে নেই। ব্রাকি থেরাপি, ইমিউনো থেরাপি এসেছে। আগে শুধু এন্ডোমেট্রোসিস কারসিনোমা বা সারভাইক্যাল ক্যানসারে ব্রাকি থেরাপি হতো। তবে আমরা এখন অন্যান্য ব্রাকি থেরাপিগুলোও করছি। যেমন আমরা ইসোফেজাল ব্রাকি থেরাপি করছি। রেক্টাল ব্রাকি থেরাপি, এনাল ক্যানসারে করছি। প্রোসটেট ক্যানসারে করছি। হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের ব্রাকি থেরাপি দেখছি। অন্যান্য ব্রাকি থেরাপি আমরা শুরু করেছি। আমাদের অন্যান্য সেন্টারে কিন্তু এটা এখনো হয়নি। আশা করি, অন্যান্য সেন্টারে শুরু করবে। আগে যে কনভেনশনাল ক্যামোথেরাপি ছিল তার জায়গায় পরিবর্তিত হচ্ছে টার্গেটেড থেরাপি। আগে ইনজেকটেবল ফর্মের চেয়ে এখন টার্গেটেড থেরাপি এসেছে।
এমনকি ক্যানসারের রোগ নির্ণয়েও আমরা সব দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছি।