দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বাড়ছে কেন?
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বা ক্রনিক কিডনি রোগ দিন দিন বাড়ছে। এর কারণ কী?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৯৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. কামরুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বাড়ছে কেন?
উত্তর : বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, তিনটি প্রধান কারণে কিডনি নষ্ট হচ্ছে। একটি হলো ডায়াবেটিস। এটা আমাদের সমাজে মহামারীর মতো। আবার দেখা যাচ্ছে ডায়াবেটিসের রোগী অত সতর্কভাবে চলছে না। এ কারণেই কিন্তু কিডনিগুলো নষ্ট হচ্ছে। দ্বিতীয় হলো প্রেশার। আরেক হলো নেফ্রাইটিস। এই রোগ কিন্তু ধরা যায় না। প্রস্রাব পরীক্ষা করার আগে নেফ্রাইটিস রয়েছে কি না, বোঝা যাবে না। প্রস্রাবের একটি সামান্য পরীক্ষা করলে বোঝা যায় নেফ্রাইটিস রয়েছে কি না। সমস্যা হলো, নেফ্রাইটিস খুব ধীরে ধীরে নীরব ঘাতকের মতো কিডনি নষ্ট করে। অন্তত ৫০ ভাগ নেফ্রোন যদি নষ্ট না হয়, কিডনি যদি নষ্ট না হয়, তার কোনো লক্ষণই প্রকাশ পাবে না।
দেখা যায়, নেফ্রাইটিসটা হয়ে গেছে হয়তো পাঁচ বছর আগে। ধীরে ধীরে যখন লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, তখন কিন্তু ৫০ ভাগ নেফ্রন আর নেই। নষ্ট হয়ে গেছে।
আমরা জানি, কিডনি একটি ছাঁকনির মতো কাজ করে। ওই ছাঁকনি যখন ফেঁসে যায়, তখন প্রোটিন চলে যায়। কিছু পরীক্ষা করে যদি দেখা যায়, তাহলে কিন্তু সতর্ক থাকা যায়। এখন কিন্তু স্ট্রিপ টেস্ট এসেছে। প্রস্রাবের মধ্যে দিয়ে দিলেই বোঝা যাবে প্রোটিন আছে, নাকি নেই।
আমার মনে হয়, প্রতিবছরই প্রতিটি স্কুল-কলেজে যদি প্রস্রাব পরীক্ষা করা যায়, তাহলে ভালো হয়। আমার একটি পরিকল্পনা রয়েছে এমন করার। কারণ, এই রোগ কিন্তু তরুণদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। ২০/২৫ বছরে কিডনির সম্পূর্ণ অকার্যকারিতা নিয়ে রোগী আসছে। এই রোগ কিন্তু একদিনে হয়নি। অনেক আগে থেকে হয়েছে। লক্ষণ ছিল না।
তবে আমরা যদি প্রস্রাবের পরীক্ষা করতাম, তাহলে ধরতে পারতাম। আগে ধরতে পারলে আরো ১০/১৫ বছর কিডনিকে ভালো রাখতে পারতাম।