কানে কটনবাড ব্যবহার নয়
কানে ময়লা বা খৈল জমলে অনেকে কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। তবে বিষয়টি ঠিক নয়। এতে কানে নানা সংক্রমণ হতে পারে।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০০৫তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. কামরুল হাসান তরফদার। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদালয়ে নাক, কান, গলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সেই যত্ন করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা শিশুর কানের ময়লা পরিষ্কার করি কটনবাড দিয়ে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী?
উত্তর : আসলে কানের ময়লা স্বাভাবিক জিনিস, এটি এমনি পরিষ্কার হয়। এই যে আমরা চলাফেরা করি, খাই দাই- এটি এমনি পরিষ্কার হয়। কারো কারো হয়তো কানে ময়লা জমে যেতে পারে। অথবা পানিতে, নদীতে গিয়ে গোসল করল,এই ময়লাগুলো পাটের শোলার মতো ফুলে যায়। ফুলে কানটা বন্ধ করে দিতে পারে। সেটি কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করা যাবে না। এতে আরো ময়লা ভেতরে গিয়ে পর্দা বন্ধ করে দিতে পারে। আমাদের যেসব কটনবাড সেগুলো ব্যবহার ঠিক নয়। এগুলো ট্রমা করে, ইনফেকশন করে, ফাঙ্গাস তৈরি করে।
আমরা যত্নের বিষয়ে শুরু করি প্রসূতি মা থেকে। এখন আমাদের দেশে বেশিরভাগ কনজেনিটাল ডিজঅর্ডারের কারণ মামস, মিজেলস, রুবেলা। এর ভ্যাক্সিনেশন সবাইকে নিতে হবে। মামস যেটি গলা ফুলে যাওয়া, লুতি হওয়া- এগুলো হলে ধরে নিতে হবে একটি না একটি কনজেনিটাল ডিজঅর্ডার নিয়ে শিশুটা জন্ম নেবে। গর্ভাবস্থায় ওই ধরনের রোগ যদি হয়, তাহলে ওই ধরনের ভ্যাক্সিন নিলে রোগ প্রতিরোধ হবে। ভ্যাক্সিনগুলো নিতে হবে।
আমাদের দেশে অনেক সময় মাকে আয়রন দেবে না, ভিটামিন দেবে না, শিশু মোটা হয়ে যাবে, তাহলে সিজার করতে হবে। এটি নয়। রক্তস্বল্পতা যাদের থাকে, তারাই মোটা হয় বেশি। সঠিকভাবে প্রসব হতে হবে সঠিক স্থানে।
প্রশ্ন : প্রসবের ক্ষেত্রেও কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। বাচ্চা বুদ্ধিমত্তা ছাড়া জন্ম নেবে। জন্মের সময় চাপের কারণে কানে ক্ষত হবে। এরপর নিউনেটাল জন্ডিস, ম্যানিনজাইটিস, জ্বর, আবার একদম পুরো শোনার সমস্যা নিয়ে জন্ম নিতে পারে।
এরপর আমাদের দেশের মাগুলো দুধ খাওয়ানো জানে না। শুইয়ে দুধ খাওয়ায়। অথবা একটি ফিডার মুখে দিয়ে চলে গেল, মুখে দুধ দিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। যেদিকে কাত হয়ে রয়েছে বাচ্চা টিউব দিয়ে কানে চলে গেছে।
প্রশ্ন : এতে কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : কানে ব্যথা হবে। সর্দি চলে গেছে। সারারাত শিশু চিৎকার করল। কানের পর্দা ফেটে গেল। জ্বরও কমে গেল, কানের ব্যথাও কমে গেল। কানের শোনাও কমে গেল।
এতে পরে শিশু দৌড়-ঝাঁপ করছে, ময়লা হচ্ছে, ইনফেকশন হচ্ছে, কান পাকা রোগ হচ্ছে। কানের হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ম্যানিনজাইটিস হবে, সাব ডুরালাক্সিস, এক্টট্রা ডুরালাক্সিস,ব্রেন এফসিস হতে পারে। স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।