শিশু বুকের দুধ না পেলে করণীয়
অনেক মা বলে থাকেন, বাচ্চা দুধ পাচ্ছে না। তারা বাজার থেকে দুধ কিনে আনেন বাচ্চার জন্য। অথচ একটু চেষ্টা করলেই বাচ্চাকে বুকের দুধ দেওয়া যায়।
শিশুর যথেষ্ট পরিমাণে দুধ পেতে হলে জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুধ দিতে হবে। প্রথম দু-তিন দিন দুধ কম আসে, এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময়ে শিশুর চাহিদাও কম থাকে। আসল কথা হলো, দুধ চুষাটা অব্যাহত রাখতে হবে। শিশু স্তন চুষবার সময় মাকে অবশ্যই নিরুদ্বিগ্ন এবং চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। শিশু যদি মায়ের বুক না টানতে চায়, তবে জোরাজুরি করা উচিত নয়। বরং নিরিবিলি ঘরে বসে মা আস্তে আস্তে তার মাথায় হাত বুলিয়ে, কথা বলে ধৈর্যের সঙ্গে চেষ্টা করবেন। যখন সে মুখ হাঁ করবে, তখন শিশুকে বুকের সঙ্গে মিশিয়ে ধরতে হবে। মাকে শিশুর দিকে ঝুঁকে যাওয়ার দরকার নেই।
খুব দ্রুত বা বেশি পরিমাণে দুধ এলে খাওয়ানোর সময় চোখেমুখে দুধ ছিটিয়ে পড়ে। তাই শিশুকে খাওয়ানোর আগে কিছুটা দুধ টিপে ফেলে দিতে পারেন। এতে বোঁটাও তার নিজের আকার ফিরে পাবে। শিশুর বোঁটাসহ কালো অংশ ধরতে সুবিধা হবে। দিনে ৮ থেকে ১২ বার বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এখন অবশ্য ডিমান্ড ফিডিংয়ের কথা বলা হয়, অর্থাৎ বাচ্চা যতবার চাইবে, ততবার বুকের দুধ দিন। বুকের দুধ পাচ্ছে কি না তা বুঝতে লক্ষ রাখুন, শিশু সপ্রতিভ ও চনমনে আছে কি না এবং ওজন বাড়ছে কি না–এসব বিষয়ে। নবজাত শিশু দিনে ছয়বার বা তার বেশি প্রস্রাব করলে তাতেও বোঝা যায় যে বাচ্চা ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে।
দুই সপ্তাহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার পরও যদি মায়ের বুকে পর্যাপ্ত দুধ না আসে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আজকাল সরকারি হাসপাতালে এবং ক্লিনিকেও ‘ব্রেস্ট ফিডিং কাউন্সেলিং’-এর জন্য আলাদা সেন্টার থাকে। ওখানে গিয়ে সহজেই মায়েরা সাহায্য চাইতে পারেন।
লেখক : শিশু বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল, কনসালট্যান্ট, ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল মগবাজার।