স্তন ক্যানসারে পারিবারিক ইতিহাসের ভূমিকা কী?
স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস একটি বড় ভূমিকা পালন করে। পরিবারের কারো স্তন ক্যানসার থাকলে, বিশেষ করে মায়ের দিকের যেমন মা, খালা, নানী- এদের স্তন ক্যানসার থাকলে আপনারও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে যায়।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে ৩০২৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আফরিন সুলতানা। বর্তমানে তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ এবং সিটি হসপিটাল লি.এর সার্জারি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস কী কোনো ভূমিকা পালন করে?
উত্তর : আসলেই এটি ভূমিকা পালন করে। আরেকটি বিষয় রয়েছে। সন্তান নেয়ার ব্যাপারে। ৩০ বছরের আগে সন্তান নিতে পারলে এটি সবসময় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিটা কমায়। এগুলো চাইলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
আর যেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না সেটি হলো পারিবারিক ইতিহাস। আমাদের পরিবারে মায়ের দিক থেকে, মা, খালা, নানী, বোন এই সম্পর্কে যারা রয়েছে তাদের যদি স্তন ক্যানসার থাকে, সেই ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি চারগুণ বেড়ে যায়। সেই ক্ষেত্রে আগে যাদের ক্যানসার হয়েছে, সেটিতো প্রতিরোধ করতে পারি না। তবে আমরা যেটি করতে পারি সচেতন হওয়া।
এই জন্য আগে থেকে নির্ণয় করতে হবে। এর সঙ্গে স্ক্রিনিংয়ের সম্পর্ক রয়েছে।
উপসর্গগুলো যখন দেখবেন, তখন উচিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। যেকোনো স্তনের রোগ নিয়ে যখন আসে আমরা ট্রিপল এসেসমেন্ট করি। আমরা তিনটি পর্যায়ে রোগীকে দেখি। প্রথম পর্যায়ে আমরা নিজে রোগীর ইতিহাস নিই।
এরপর শারীরিক পরীক্ষা করি। এগুলো দেখার পর আমরা চাকার ধরনটা বোঝার চেষ্টা করি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখতে চাই, অনেকে মনে করেন যে স্তনে চাকা হলেই সেটি টিউমার, সেটি টিউমার সেটা ঠিক আছে, তবে এর মানে এই নয় যে এটি ক্যানসার। তবে ক্যানসারের ক্ষেত্রে বয়সটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি ২০ বছরের মেয়ে চাকা নিয়ে আসলে এখানে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। আমরা এই জন্য ভালো করে দেখি যে এটি কী ধরনের। এরপর আমরা কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করি। শুরুতে ইমেজিং করি। আল্ট্রাসোনোগ্রাম অথবা ম্যামোগ্রাম। কোনটি করা হবে সেটি নির্ভর করে রোগীর বয়সের ওপর। সাধারণত যারা একটু কম বয়সের থাকেন, ৩৫ বছরের নিচে, তাদের আমরা আল্ট্রাসাউন্ড করার পরামর্শ দিই। ৩৫ বছর পার হয়ে গেলে সাধারণত আমরা মেমোগ্রাম করি। এখন আমরা আরো বলি যে মেমোগ্রাম করার জন্য। মেমোগ্রামকে স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্ক্রিনিং করার যে উদ্দেশ্য থাকে টিউমার হওয়ার আগে যেন ধরতে পারি। আমরা বলি ক্যানসার ইনসাইটু। একদম প্রি ক্যানসারাস লেশন। চাকা হওয়ার আগেই আমরা ধরতে পারি। যত আগে ধরতে পারবো, চিকিৎসা তত ভালো হবে। আমরা যেটি করি, সেটি হলো সেখান থেকে রস নিই বা টিস্যু নিই। এরপর একে পরীক্ষা করি। অনেক মানুষই বুঝতে পারে, এখানে এফএনএসি করা হয়েছে। সুঁইয়ের মাধ্যমে কিছু রস নিয়ে এরপর আমরা পরীক্ষা করে দেখি। আরেকটি করা হয়ে থাকে বায়োপসি। বায়োপসিই আসলে সবচেয়ে ভালো। একটি মেশিনের মাধ্যমে খুব ছোট একটি ছিদ্র করে টিস্যু নিই এবং সেটি আমরা পরীক্ষা করে দেখি, তখন সেখান থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এখানে ক্যানসার জাতীয় কোনো রোগ রয়েছে কি না।