কোলরেক্টাল রোগের লক্ষণ মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত

ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস, কোলরেক্টাল ক্যানসার ইত্যাদিকে সাধারণত কোলরেক্টাল রোগ বলা হয়। কোলরেক্টাল রোগের একটি প্রচলিত, প্রধান লক্ষণ হলো মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া।
বিভিন্ন কোলরেক্টল ডিজিসের লক্ষণের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৪৩তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আফরিন সুলতানা। বর্তমানে তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ এবং সিটি হসপিটাল লিমিটেডের সার্জারি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ফিসার বা পাইলসের সাধারণ কী কী লক্ষণ রয়েছে?
উত্তর : এসব রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে একটি প্রচলিত জিনিস থাকে। সেটি হলো মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত। মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হলেই রোগীরা ভাবেন যে পাইলস হয়েছে। এসে নিজেরাই বলবে, ‘আমার পাইলস হয়েছে।’ তবে আমি দর্শকদের জন্য বলতে চাই, মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হওয়া মানে পাইলস রোগ নয়। এসব রোগের যেকোনোটাই হতে পারে।
ফিসার প্রথমে বলি। এটি আমাদের দেশে সবচেয়ে প্রচলিত। নারী-পুরুষ-শিশু সবাই এটিতে ভোগে।
কোষ্ঠকাঠিন্য যাদের অনেক বেশি থাকে, তাদের ফিসার হয়। মলদ্বার ফেটে গিয়ে রক্ত পড়ে, সঙ্গে ব্যথা থাকে। ব্যথা নিয়ে আসা এই রোগের ক্ষেত্রে খুব প্রচলিত। সঙ্গে অনেক সময় মলদ্বারে চুলকানিও হতে পারে।
পাইলসের ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যথা থাকে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে, যখন থ্রম্বোস পাইলস বলি বা পাইলস যদি বাইরে এসে আটকে যায়। তখন সে ক্ষেত্রে ব্যথা থাকতে পারে।
আর যাদের ফিস্টুলা থাকে, সে ক্ষেত্রে সাধারণত কিছুদিন পরপর জায়গাটা ফুলে ওঠে। মলদ্বারের পাশের জায়গা ফুলে ওঠে, লাল হয়, ব্যথা হয়। এরপর সেই জায়গা ফেটে গিয়ে পুঁজ বা রক্ত বের হয়ে আসে। সাধারণত এ ধরনের লক্ষণ নিয়েই ফিস্টুলা রোগীরা আসে। অনেক সময় একটি মুখের বদলে কয়েকটি মুখও থাকতে পারে।
আর ক্যানসার রোগের ক্ষেত্রে মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত ছাড়াও আরো কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। সে ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়া, খাবারের রুচি কমে যাওয়া বা রক্তশূন্যতা হতে পারে।
প্রশ্ন : এসব রোগের সিক্যুয়াল হিসেবে কি ক্যানসার থাকতে পারে?
উত্তর : এই রোগগুলোর সিক্যুয়াল হিসেবে নয়। ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এগুলো মলদ্বারের কাছের রোগ। আর ক্যানসার মলদ্বারেও হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যে জায়গাটায় হয় সেটি হলো রেক্টাম ও বৃহদান্ত্র। এই জায়গাগুলোতে সবচেয়ে বেশি হয়। সে জন্য এখানে আরো কিছু বাড়তি লক্ষণ থাকে, যেমন—পায়খানার সঙ্গে আম যাওয়া।
অনেক ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও এখানে হতে পারে। টিউমার কিন্তু একটি গ্রোথের মতো বা একটি টুকরোর মতো জিনিস বের হয়ে আসছে। এতে কিন্তু পথটা সরু হয়ে যায়। তখন কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়েও রোগীরা আসতে পারে। অথবা দীর্ঘদিন আমাশয় নিয়েও আসতে পারে। আর ওজন কমে যাওয়া, রক্তস্বল্পতা এগুলো নিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় পেটের মধ্যে চাকা নিয়ে আসতে পারে। ক্যানসারের সঙ্গে সাধারণত আরো বিভিন্ন লক্ষণ নিয়ে রোগীরা আসে।