জেদ্দায় ব্যবসায় মন্দা, ছাদ থেকে বাংলাদেশির লাফ
সৌদি আরবের জেদ্দায় চারতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। ব্যবসায় মন্দা ও পারিবারিক কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে জেদ্দার বাংলাদেশি অধ্যুষিত গুরাইয়াত (বাংলাদেশি মার্কেট) বাজারের পাশে এই ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে সৌদি পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত বাংলাদেশির নাম আবুল কালাম (৪৬)। তিনি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চমদারপাড়ার ৬ নম্বর গলির বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি সকাল ১১টার দিকে আমার দোকানে কাজ করছিলাম। এমন সময় একটি আওয়াজ ভেসে আছে আমার কানে। দেখি আশপাশের লোকজন ছোটাছুটি করছে। আমিও বাইরে গিয়ে দেখি আবুল কালামের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে আছে। পরে লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে গুরুতর আহত আবুল কালামকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শুনেছি আবুল কালাম হাসপাতালে মারা যান।’
আবুল কালাম সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আবুল কালাম লোক হিসেবে অনেক ভালো ছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। শুনেছি পারিবারিক কলহ এবং ব্যবসায় সমস্যার কারণে তিনি কয়েকদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন। হয়তো সেই কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।’
আবুল কালামের পাশের রুমের বাসিন্দা শাহজাহান জানান, কিছুদিন ধরে আবুল কালাম মানসিক চাপে ছিলেন। মৃত্যুর পর জানতে পারি আবুল কালাম ব্যবসার জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন রমজানের পর ফেরত দেবেন বলে। কিন্তু হঠাৎ ওই লোকের টাকার প্রয়োজন হয়। এদিকে আবুল কালামের ব্যবসায় মন্দা হওয়ার কারণে বেশ লোকসান গুনতে হচ্ছিল। হয়তো সেই মানসিক চাপ থেকে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করছেন তিনি।
এই দিকে আবুল কালামের সঙ্গে তাঁর রুমেই থাকতেন ভাগ্নে। তিনি বলেন, ‘মামা সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়িতে ফোন করেন। ফোনের মধ্য কিছু কথা কাটাকাটি করতে শুনেছি। ফোনের ওই দিক থেকে লাইন কেটে দেয়। মামা অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন আমার ঘুম চলে আসে। হঠাৎ চিৎকারের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে তাকিয়ে দেখি মামার নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে আছে।’
আবুল কালামের শ্যালক সোলাইমান জানান, তাঁর দুলাভাই হঠাৎ এই কাজ করবে তা কেউ কল্পনাও করেননি। আবুল কালামের দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে বলে জানান তিনি।