আপনার জিজ্ঞাসা
পীর নাকি নবীর অসিলা ধরব?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৯৩৫তম পর্বে আমরা পীর নাকি নবীর অসিলা ধরব, সে সম্পর্কে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে ইমেইলে জানতে চেয়েছেন মামুন আল বাকী।
অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : অসিলা কী? আমরা কার অসিলা ধরব, পীরের নাকি নবীর?
উত্তর : অসিলা অর্থ হচ্ছে, নৈকট্য অর্জন করা। আমরা নৈকট্য নেব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের, কোনো পীরের, নবীর বা ওলির নয়।
নৈকট্য অর্জনের যতগুলো মাধ্যম আছে, সবই আমরা গ্রহণ করব। এই মাধ্যম কেমন, তা কোরআন ও হাদিসে এসেছে। যেমন : কোরআন তিলাওয়াত করে আল্লাহর কাছে এটার অসিলা দিয়ে দোয়া করবেন অথবা দুই রাকাত সালাত আদায় করে এর অসিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। অথবা কোনো ভালো মানুষের সঙ্গে হাত তুলে, তাঁর দোয়ার সঙ্গে মিলিয়ে দোয়া করলেন, যেন আপনার দোয়াও কবুল হয়, এটিও শরিয়ত সমর্থিত। অথবা আল্লাহর নাম এবং গুণের অসিলা দিয়ে দোয়া করলেন।
এই তিনটি অসিলা শরিয়তে অনুমোদিত। একটি হচ্ছে, আল্লাহর নাম অথবা গুণ দিয়ে দোয়া করবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যদি বিপদে পড়ে, সে যেন আল্লাহর নাম এবং গুণের অসিলা দিয়ে দোয়া করে।’ ‘হে আল্লাহ তোমার সমস্ত নামের অসিলা দিয়ে আমি দোয়া করছি, যেগুলো তুমি নিজে নাম রেখেছ অথবা কাউকে জানিয়েছ, অথবা কিতাবে দিয়েছ, অথবা কাউকে জানাওনি, রেখে দিয়েছ তোমার ভান্ডারে।’
রাসূল (সা.) এভাবেই আল্লাহর নামের অসিলা দিয়ে দোয়া করতেন।
দ্বিতীয় অসিলা হচ্ছে, আপনার যেকোনো নেক আমল, আপনার ভালো একটি কাজের অসিলা দিয়ে দোয়া করবেন। যেমন— দুই রাকাত সালাত আদায় করে, কুরআন তিলাওয়াত করে বা দান সদকা করে তার অসিলা দিয়ে দোয়া করতে পারেন। এটা শরিয়তে অনুমোদিত।
তৃতীয় হচ্ছে, একজন ভালো মানুষ দোয়া করছেন। তাঁর সঙ্গে দোয়ায় শরিক হয়ে আপনি দোয়া করলেন। সেটাও শরিয়তে অনুমোদিত। রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে এসে সাহাবায়ে কেরাম দোয়া করতেন, সে দোয়াতে আল্লাহ তায়ালা বরকত দিতেন এবং সেই দোয়া আল্লাহ কবুল করতেন।
এই তিনটির বাইরে আর কোনো অসিলা শরিয়তে জায়েজ নেই। এর বাইরে কোনো কোনোটা শিরক হয়, কোনো কোনোটা হারাম হয়। মূল কথা হলো, কোনো ব্যক্তিকে কখনো অসিলা করা যাবে না।