পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াক মিডল অর্ডার
ত্রিদেশীয় সিরিজে একটা দৃশ্য বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ শিবিরে। টপঅর্ডারে বড় রান যখন বেশ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে টাইগারদের স্কোরকার্ড, ঠিক তখনই মিডল অর্ডারের দৈন্যদশায় পুঁজিটা হচ্ছে না খুব বেশি বড়। জয় পেলেও এ জায়গাটায় ফাঁকটা রয়েই যাচ্ছে।
প্রথম ম্যাচটা তো বোলারদের দারুণ বোলিংয়ের পর সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল মিলেই বাংলাদেশকে ভিড়িয়ে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে। বাকি দুই ম্যাচেও এই সাকিব-তামিমেই জয়ের ভিত গড়েছে টাইগাররা। অথচ মিডল অর্ডারের দারুণ সমর্থন দুই ম্যাচের অন্তত শেষেরটাতে বাংলাদেশের স্কোরকে করতে পারত আরো বড়।
নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে দ্রুত এনামুলকে হারিয়ে বিপাকে পড়া বাংলাদেশকে আবারও পথ দেখিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল। আগের ম্যাচে দুই মাইলফলক ছোঁয়া তামিম ইকবাল গড়েছেন ৭৬ রানের দারুণ ইনিংস। সাকিবের নামের পাশে ছিল ৫১ রানের ইনিংস।
মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর পালা ছিল এরপর ইনিংসটা এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব। ১৮ রান করে সাজঘরে মুশফিক, ২ রানে রিয়াদ। তামিম ইকবাল একপাশে থাকলেও তিনি ফেরার পরই মূলত বিপর্যয়টায় পড়ে বাংলাদেশ।
আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগটা ঠিকঠাক পাননি সাব্বির রহমান এবং নাসির হোসেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাব্বির ১২ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেও নাসির ফিরেছিলেন শূন্য হাতেই। এ ম্যাচে দলের বিপর্যয়ে তাই এই দুজনের ওপর ছিল পাহাড়সমান প্রত্যাশা। মঞ্চটাও প্রস্তুত ছিল তাঁদের জন্য। কিন্তু ক্রেইগ অরভিনের দুর্দান্ত ক্যাচে সাব্বির ফিরে যাওয়ার পর নাসিরের অমন আউট ছিল দৃষ্টিকটুই। বলটা ছেড়েই দিতে পারতেন মিস্টার ফিনিশার। তা না করে যা করলেন তাতে মনে হলো জিম্বাবুয়ে উইকেটরক্ষক ব্র্যান্ডন টেলর ক্যাচের অনুশীলনের দায়িত্বটা তার ওপরই! সহজ ক্যাচে ২ রানে ফিরতে হলো নাসিরকে। একটু পর মাশরাফির বিদায়ে সাত রানের মধ্যেই ১৬৩-৪ থেকে বাংলাদেশের স্কোরকার্ড হয়ে যায় ১৭০-৮।
তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসান সম্ভবত ক্যারিয়ারে তাঁদের সবচেয়ে দুর্দান্ত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। সময়টা যত বেশি তাঁদের অনুকূলে থাকবে ততই মঙ্গল বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু এ দুজন যদি ব্যর্থ হন তবে দায়িত্বটা নিতে হবে পরের ব্যাটসম্যানদেরই।
ত্রিদেশীয় সিরিজে এই জায়গাটাতে হতাশ হতেই পারেন টাইগার ভক্তরা। বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে শেষ ম্যাচটায় না হয় জয়টা এসেছে সহজেই। কিন্তু এটাও তো সত্যি যে, লোয়ার অর্ডারে ৪৫ রান যদি না আসত তবে বাংলাদেশ দুশর আগে গুটিয়ে গেলেও গুটিয়ে যেতে পারত। তখন জিম্বাবুয়ে দলের মানসিকতাটাও থাকত ওপরেই। ফলাফলটাও হতে পারত উল্টো।
ফাইনালের আগে তাই টাইগারদের সামনে এখনই সেরা সময় নিজেদের মাঝের জায়গাটা বেশ ভালো করে ঝালিয়ে নেওয়ার। সেটা নেবেও হয়তবা টাইগাররা। এত দারুণ একটা সিরিজ পার করে পচা শামুকে অন্তত ফাইনালে পা কাটতে অবশ্যই চাইবেন না মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির কিংবা নাসিররা!