সাগরিকায় টাইগারদের ৫০০ তৃতীয়বারের মতো

মুমিনুল হকের দ্বিশতক না পাওয়ার আফসোসটা থাকতেই পারে। সঙ্গীর অভাবে অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমেই শতক না হাঁকানোর হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। তার পরও বাংলাদেশ স্কোরকার্ডে তুলেছে ৫১৩ রানের বড় সংগ্রহ। এই নিয়ে টেস্টে সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশ গড়ল ৫০০ ছাড়ানো স্কোর।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন থেকেই বড় সংগ্রহের পথে ছুটছিল টাইগাররা। ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিলেন ১৭৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকা মুমিনুল হক আর ৯ রানে আরেক পাশে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
চতুর্থ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকা মুমিনুল অবশ্য ফিরেছেন আগের দিনের সঙ্গে মাত্র ১ রান যোগ করেই (১৭৬)। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ফিরেছেন দ্রুতই। মেহেদী হাসান মিরাজ ঝড়ো গতিতে রান তুলে সাজঘরের পথ ধরলেও দলনায়ক মাহমুদউল্লাহ লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে ঘরের মাঠে পঞ্চমবারের মতো দলকে নিয়ে যান ৫০০ রানের ঘরে।
সাগরিকায় এই স্কোর বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের জায়গায়ও অবস্থান করে নিয়েছে। আর বরাবরের মতো বাংলাদেশ দলের জন্য ‘পয়া’ এই মাঠে টাইগাররা দেখা পেয়েছে তৃতীয়বারের মতো ৫০০ ছাড়ানো পুঁজি। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এটাই টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
সর্বপ্রথম ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ স্কোরকার্ডে তুলেছিল পাঁচশর বেশি স্কোর। নাইম ইসলামের শতকের সঙ্গে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, নাসির আর মাহমুদউল্লাহর অর্ধশতকে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫৫৬ রান। ৭৭ রানে হেরে যাওয়া সেই টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে গড়া সেই স্কোরই তখন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এবারের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই মাস চারেক পরে গলের মাঠে টাইগাররা সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে গড়ে নতুন রেকর্ড। সাকিব-তামিমবিহীন সেই টেস্টে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হাঁকিয়েছিলেন দুর্দান্ত এক দ্বিশতক। মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০ আর নাসির হোসেনের প্রথম টেস্ট শতকে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ছাড়িয়েছিল ৬০০ রানের ঘর। ৬৩৮ রানের সেই স্কোরের পর এখন পর্যন্ত অবশ্য বাংলাদেশ আর দেখা পায়নি ৬০০ রানের। এখন পর্যন্ত টেস্টে টাইগারদের সেরা সংগ্রহ সেটাই।
গল টেস্টের ঠিক পরেই জায়গা পাবে ইতিহাস গড়া সেই ওয়েলিংটন টেস্টের বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। গলে দ্বিশতক পেয়েছিলেন মুশফিক আর এই টেস্টে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সাকিব আল হাসানের উইলো থেকে এসেছিল অনবদ্য এক ডাবল সেঞ্চুরি। ২১৭ রান করে টেস্টে এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সেদিনই হয়েছিলেন সাকিব। পাশাপাশি মুশফিকের ১৫৯ রান বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল ৬০০ ছুঁইছুঁই স্কোর। ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান তুলে বাংলাদেশ ঘোষণা করেছিল ইনিংস।
খুলনায় ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল গড়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম এবং বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই টেস্ট ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকেই এসেছিল ১৫০ রানের ইনিংস। ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলতেই শেষ হয়ে যায় পঞ্চম দিনের খেলা। টেস্টের ফল ছিল ড্র।
৫০০ ছাড়ানো বাকি দুই স্কোরও এসেছে এই চট্টগ্রামেই। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫০৩ রান। তার ঠিক এক বছর আগে কিউইদের বিপক্ষে সাদা পোশাকে বাংলাদেশ গড়েছিল ৫০১ রান।
কাকতলীয়ভাবে চট্টগ্রামে টাইগারদের তিন স্কোরেই অসামান্য অবদান রেখেছেন মুমিনুল হক। চলতি টেস্টসহ বাকি দুই ম্যাচেও এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে এসেছিল দুটি শতক।