শতকের আক্ষেপ ছাপিয়ে মাহমুদউল্লাহর দুই হাজার
সহ-অধিনায়কের তকমাটা গায়ে লাগিয়ে টেস্টে মাঠে নামার প্রস্তুতিটা নিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। হঠাৎই অধিনায়ক সাকিব আল হাসান পড়লেন ইনজুরিতে, আর্মব্যান্ডটা নিঃশব্দে রিয়াদের বাহুতে। প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেওয়ার টেস্টটাতেই ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ছাড়িয়ে গেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারে দুই হাজার রানের মাইলফলক।
১,৯৩১ রান নিয়ে নতুন অধিনায়কের অপেক্ষাটা ছিল দুই হাজারের ক্লাবে প্রবেশ করার। ৮৩ রানে অপরাজিত থেকে সমর্থনের অভাবে শতকটা পাননি মাহমুদউল্লাহ। অবশ্য সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে দ্বিসহস্র রান সংগ্রহের রেকর্ডটা নির্ভরশীল এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে জোগাতে পারে সান্ত্বনা।
ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন আগের দিনের শেষ বিকেলে। হুট করেই বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছিল দুই উইকেট। মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ আর কোনো উইকেটের পতন হতে না দিয়েই শেষ করেছিলেন দিন। দ্বিতীয় দিনের সকালে নেমে আবারও সেই বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপ। ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ না পেয়ে ১৭৬ রানে মুমিনুল আর মোসাদ্দেক বিদায় নেন ৮ রান করে।
হঠাৎ পথ হারানো বাংলাদেশকে আগের মতই পথে ফেরানোর চেষ্টায় দলনায়ক এবার লড়াইটা শুরু করেন লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়েই। শেষ তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে দলের স্কোরকার্ডে যোগ করলেন ৯৬ রান, এর মধ্যে নিজের ব্যাট থেকেই ৬০ রান! মুস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গী বানিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে এনে দিলেন ৩৭ রান। আর এতেই বাংলাদেশ সপ্তমবারের মতো পার করল ৫০০ রানের ঘর।
একদিন আগেই বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে দ্রুত দুই হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন মুমিনুল। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের লেগেছে ৪৭ ইনিংস। আর এবার মাহমুদউল্লাহ যখন দেখা পেলেন দুই হাজারের ঘর, তাঁর লাগল ৬৭ ইনিংস। ইনিংসের সংখ্যার দিক দিয়ে মুশফিককে ছুঁয়ে দিলেন মাহমুদউল্লাহ, দুজনেরই লেগেছে ৬৭ ইনিংস।
সাদা পোশাকে টেস্ট আঙিনায় প্রবেশের সময়টায় মাহমুদুল্লাহ ব্যাটিংটাতেই আসতেন একদম নিচের দিকে। প্রথম ১০ ইনিংসে এই অলরাউন্ডারের দেখা মিলেছে ব্যাটিং অর্ডারের আট কিংবা নয় নম্বরে। এর পরে উঠে এসেছেন ওপরে। এক শতক আর দুই অর্ধশতকে ৪৮-এর ওপরে থাকা গড়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি এত নিচে নামবার ব্যাটসম্যান নন।
৩৬ টেস্টে ৬৭ ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর বর্তমান সংগ্রহ ২,০১৪ রান। এক শতকের পাশে রয়েছে ১৫ অর্ধশতক, গড়টা ৩১.৪৬।
শতকটার দেখা পেলে ৩০তম অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্বের শুরুর ম্যাচেই দেখা পেতেন শতকের। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটা পেলেও পেতে পারেন, নাও পেতে পারেন। তবে নিজের টেস্ট রানটা দুই হাজারের ঘরে নিয়ে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ আশার আলোটা জ্বেলেই দিলেন। ওয়ানডেতে তাঁর উইলোতে ভর করে অনেক রঙিন ছবির সাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। এবার পালা টেস্টের সাদা জার্সিতে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।